শিক্ষা

অক্টোবরে খুলছে ঢাবি হল, কী ভাবছেন শিক্ষার্থীরা

আবু বকর ইয়ামিন

ঢাকা, ২৬ আগস্ট – আগামী ১ অক্টোবর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খোলার পরিকল্পনা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

শুরুতে অনার্স ফাইনাল ইয়ার এবং মাস্টার্স পরীক্ষার্থীদের জন্য হল খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে টিকা নেওয়ার শর্তে ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় নভেম্বর থেকে সব শিক্ষার্থীদের জন্য হল খুলে দেওয়া হবে।

সেজন্য শিক্ষার্থীদেরকে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে টিকা কার্যক্রমের আওতায় আসার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। টিকা গ্রহণের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

হল খোলা ও টিকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে অধিকাংশ শিক্ষার্থীই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, অনেকদিন পরে হলেও বিশ্ববিদ্যালয় একটি ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এ সিদ্ধান্ত অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।

জয়নাল আবেদীন নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকদিন পরে হলেও সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে সিদ্ধান্তটি আরও আগে নেওয়া উচিত ছিল। কারণ, যাদের পরীক্ষা রয়েছে তাদের পরীক্ষা নেওয়ার জন্য হলেও হল খোলা খুব জরুরি ছিল। অনলাইন বা ভার্চুয়াল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সবকিছু করার মতো সক্ষমতা এখনো আমাদের দেশে হয়ে ওঠেনি। তাই, হল খুলে পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত ইতিবাচক।’

মাহমুদুল হাসান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘হল খোলার সিদ্ধান্ত সঠিক। তবে যেসব শর্ত দিয়েছে এটা কোনোভাবেই মেইনটেইন করা সম্ভব হবে না। যদিও পরীক্ষার্থীদের জন্য হল খোলার কথা বলা হচ্ছে। তবে সব শিক্ষার্থীই নানা অজুহাতে হলে যাবে এবং থাকবে। তাদের নিয়ন্ত্রণের বিশ্ববিদ্যালয় তেমন কোনো নির্দেশনা দেয়নি। বিশেষ করে পলিটিক্যাল শিক্ষার্থীদের বিষয়ে প্রশাসনকে বরাবরই অসহায় ভূমিকায় দেখা গেছে।’

ফারুক হাসান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বলা হচ্ছে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে টিকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। কিন্তু দেখা গেছে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে গোছালো কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। যে যার মতো করে টিকা গ্রহণ করছে। আর সঠিক সময়ে কোনো এসএমএসও আসে না। এসব মেইন্টেন করতে ঠিকই সময় চলে যাবে। তাই সঠিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা নিয়ে সংশয় রয়েছে।’

এদিকে, বুধবার (২৫ আগস্ট) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত ডিনস কমিটির এক বিশেষ সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে— দেশের সার্বিক করোনা পরিস্থিতির আশাব্যঞ্জক উন্নয়ন হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য আগামী ১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমূহ সীমিত পরিসরে খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। তাই যেসব শিক্ষার্থী এখনো টিকা কার্যক্রমের আওতায় আসেনি, তাদেরকে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে টিকা কার্যক্রমের আওতায় এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষকে জানাতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ডিনস কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে, প্রথম পর্যায়ে চতুর্থ বর্ষ (সম্মান) ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ১ম, ২য় ও ৩য় বর্ষ (সম্মান) শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য নিজ নিজ আবাসিক হল খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

সব শিক্ষার্থী টিকা কার্যক্রমের আওতায় না এলে আবাসিক হল খোলা এবং সশরীরে ক্লাস ও পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা ব্যাহত হবে। তবে অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সূত্র : রাইজিংবিডি
এন এইচ, ২৬ আগস্ট

Back to top button