জাতীয়

নতুন নিয়মে ১০ হাজার পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ

ঢাকা, ২১ আগস্ট – প্রায় ১০ হাজার পুলিশ কনস্টেবল নেবে বাংলাদেশ পুলিশ। ২০২০ সালের শেষদিকে এই নিয়োগ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও যোগ্যতা সংক্রান্ত কিছু মানদণ্ড নির্ধারণের কারণে সেটা পিছিয়ে যায়। নতুন করে চলতি বছরের জুন ও জুলাই মাসে এই নিয়োগ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দেশে ফের করোনার ঊর্ধ্বগতির কারণে তা আবারও পিছিয়ে যায়।

তবে পুলিশ সদর দপ্তরের বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে প্রায় ১০ হাজার ট্রেইনি কনস্টেবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেবে পুলিশ। এবারের কনস্টেবলের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে নতুন নিয়মে। সাত ধাপে হবে এই পরীক্ষা। এই ধাপগুলোতে কোনো প্রার্থী যদি অকৃতকার্য হয় তাহলে সেই প্রার্থী আর অন্য ধাপে উত্তীর্ণ হতে পারবে না।

পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগ কনস্টেবল নিয়োগ পদ্ধতির একটি মাল্টিমিডিয়া ভিডিও প্রকাশ করেছে। ভিডিওটিতে নিয়োগের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।

যেসব নতুন নিয়মে হবে কনস্টেবল নিয়োগ

প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং, শারীরিক মাপ ও ফিজিক্যাল অ্যান্ডুরেন্স টেস্ট, লিখিত পরীক্ষা, মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা, প্রাথমিক নির্বাচন, পুলিশ ভেরিফিকেশন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভূক্তকরণ।

ওয়েবসাইটে আবেদন পদ্ধতি ও প্রবেশপত্র: আগামী সেপ্টেম্বর মাসেই পুলিশের প্রায় ১০ হাজার কনস্টেবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে। বিজ্ঞপ্তি দেয়ার পর আবেদনকারীরা পুলিশ সদর দপ্তরের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদনপত্র পূরণ করে জমা দেবেন। ওয়েবসাইটে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওয়েববেজড স্ক্যানিং করা হবে।

আবেদনকারীর মোবাইল নম্বরে একটি এসএমএস করা হবে। এসএমএসে নিয়োগ সংক্রান্ত ওয়েব পোর্টালে লগইন করার জন্য ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দেওয়া হবে। সেই পোর্টালে লগইন করে আবেদনকারীকে নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিতে হবে।

সেই প্রবেশপত্র প্রিন্ট করে নিয়োগ পরীক্ষার প্রতিটি ধাপে অংশগ্রহণ করতে হবে। নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর দিন প্রার্থীদের পুলিশের নির্ধারিত স্কেলে বুকের মাপ ও ওজন-উচ্চতা নেওয়া হবে। এরপর প্রার্থীর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই করে তাকে পরবর্তী পরীক্ষার জন্য যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করে তার ফরমে একটি সিল দেওয়া হবে।

শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষা: পরবর্তী ধাপে অনুষ্ঠিত হবে শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষা। এ পরীক্ষার আগে প্রার্থীকে ইনডেমনিটির ঘোষণাপত্র নামে একটি ফরম পূরণ করতে হবে। ফরমে ওই প্রার্থী শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ আছে বলে ঘোষণা দিয়ে স্বাক্ষর করবেন।

শারীরিক সক্ষমতার পর সাত ধাপ: শারীরিক সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য ধাপে ধাপে সাতটি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করতে হবে। সেগুলো হচ্ছে- দৌড়, পুশ আপ, লং জাম্প, হাই জাম্প, ড্র্যাগিং ও রোপ ক্লাইমিং। এ ধাপের কোনো একটিতে অকৃতকার্য হলে পরবর্তী ধাপের পরীক্ষায় অংশ নেয়া যাবে না এবং সেখানেই তার পুলিশ হওয়ার স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে।

ড্র্যাগিং পরীক্ষা: শারীরিক সক্ষমতা যাচাইয়ের ষষ্ঠ ধাপে রয়েছে ড্র্যাগিং পরীক্ষা। এ ধাপে পুরুষ প্রার্থীদের ১৫০ পাউন্ডের টায়ারকে টেনে ৩০ ফুট দূরত্ব ও নারী প্রার্থীদের ১১০ পাউন্ড ওজনের টায়ার ২০ ফুট দূরত্বে আনতে হবে। এছাড়াও রোপ ক্লাইমিং পরীক্ষায় পুরুষদের ১২ ফিট এবং নারীদের আট ফিট দড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে হবে।

লিখিত পরীক্ষা: শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সব ডকুমেন্ট নিয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। লিখিত পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ে ৪৫ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ১৫ নম্বরের মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।

এরপর লিখিত, মৌখিক ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষার পর উত্তীর্ণদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মো. সোহেল রানা বলেন, নিয়োগ ও নিয়োগ প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ করতে নিয়োগবিধিতে কিছু সংশোধনী আনা হচ্ছে। সংশোধনীগুলো চূড়ান্ত হলেই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।

বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশে প্রায় দুই লাখ ১০ হাজার সদস্য রয়েছে। ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধাপে ধাপে আরও ৫০ হাজার পুলিশ নিয়োগের নির্দেশনা দেন।

সূত্র : বাংলাদেশ জার্নাল
এম এউ, ২১ আগস্ট

Back to top button