আইন-আদালত

আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন পিয়াসা

ঢাকা, ২০ আগস্ট – মাদক মামলায় কথিত মডেল ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।

বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ ও সিসা সামগ্রীসহ গ্রেপ্তারের পর আলোচিত মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই ছবিতে দেখা গেছে, পিয়াসা অত্যাধুনিক একটি ‘উজি পিস্তল’ বা আধা স্বয়ংক্রিয় (সেমি অটোমেটিক) উচিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। অত্যাধুনিক এই অস্ত্র কীভাবে তার কাছে এলো বা অস্ত্রটির মালিক কে, এ নিয়ে শুরু হয় গুঞ্জন।

তদন্ত সংস্থা সিআইডি বলছে, পিয়াসা জানিয়েছেন অস্ত্রটি তার নিজের নয়। ‘শো অফ’ করতেই তিনি ছবিটি তুলেছিলেন। একটি গ্রুপের এমডি তার অফিসে বসেই অস্ত্রহাতে এই ছবি তুলে দেন। যা পরবর্তীতে ভাইরাল হয়। এদিকে ১ আগস্ট রাতে রাজধানীর বারিধারায় মডেল পিয়াসার বাসায় অভিযান শুরু করে ডিবি পুলিশ। বাড়িতে তল্লাশির এক পর্যায়ে বিভিন্ন রুমে থাকা বিপুল মদ, ইয়াবা ও সিসা খাওয়ার সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। পরে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিমের সাবেক পুত্রবধূ ফারিয়া মাহবুব পিয়াসাকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। পিয়াসার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মডেল মৌ আক্তারকে মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে আটক করা হয়। পরে গুলশান ও মোহাম্মদপুর থানায় তাদের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা হয়। সেই মামলা তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ- সিআইডি।

সংস্থাটি জানিয়েছে, মাদক মামলায় তিনদিনের রিমান্ড শেষে ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। জবানবন্দির একটি অংশে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘অস্ত্রহাতে তার একটি ছবি ভাইরাল হয়। অস্ত্রটি একটি গ্রুপের এমডি। তার অফিসে প্রদর্শন করে। তিনি ওই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি অস্ত্রটি হাতে নিলে সেই ছবিই ভাইরাল হয়।

এদিকে মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌ ছিলেন সংঘবদ্ধ ব্ল্যাকমেইল চক্রের সদস্য। তারা উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের পার্টির নামে বাসায় ডেকে মদ ও ইয়াবা খাইয়ে আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইলিং করতেন বলে দাবি করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি।

গোয়েন্দারা বলছে, তারা (পিয়াসা ও মৌ) দিনের বেলায় ঘুমাতেন এবং রাতে এসব কর্মকাণ্ড করতেন। বিশেষ করে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের পার্টির নামে বাসায় ডেকে আনতেন তারা। বাসায় এলে তারা তাদের সঙ্গে আপত্তিকর ছবি-ভিডিও তুলে রাখতেন।

দুই বছর আগে পিয়াসা নামটি বেশ আলোচনায় ছিল। দেশের প্রথম সারির জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিম তার সাবেক পুত্রবধূর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। তার সেই সাবেক পুত্রবধূর নাম ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা। চাঁদা দাবির অভিযোগে ২০১৯ সালের ৫ মার্চ সাবেক পুত্রবধূর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন দিলদার আহমেদ। মামলার পর ঢাকার মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান পিয়াসা। মামলাটি জামিনযোগ্য হওয়ায় তাকে জামিন দেন আদালত।

সূত্র : বাংলাদেশ জার্নাল
এন এইচ, ২০ আগস্ট

Back to top button