ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় আরও ক্ষমতা তদন্তকারীদের
কলকাতা, ১৯ আগস্ট – ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক তরজা। পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল। কিন্তু বুধবার কমিশনের সেই সুপারিশ মেনেই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণ, সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখে বলা যায় কমিশনের তদন্ত রিপোর্টে ‘নিরপেক্ষতা’ উলঙ্ঘন হয়নি। তারা শুধুমাত্র অভিযোগগুলি নথিভুক্ত করেছিল। তার প্রেক্ষিতেই এই রায়।
রাজ্য ঘুরে ভোট পরবর্তী হিংসার তথ্য তুলে এনে রিপোর্ট তৈরি করে কমিশন। সেই রিপোর্টে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেছিল তারা। সেই সঙ্গে বাড়িঘর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, মারধরের ক্ষেত্রে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠনের কথাও উল্লেখ করা হয়েছিল। বুধবার আদালতের রায় কার্যত কমিশনের সেই সুপারিশকেই মান্যতা দিল।
তিন আইপিএস অফিসার সুমনবালা সাহু, সৌমেন সেন ও রণবীর কুমারকে নিয়ে সিট গঠন করেছে আদালত। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নজরদারিতে হবে এই তদন্ত। ছ’সপ্তাহের মধ্যে সিবিআই ও সিট দু’টি তদন্তের রিপোর্টই আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে লক্ষ্যনীয়, আদালত সিটকে বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছে। নির্দেশে বলা হয়েছে, আদালতের অনুমতি ছাড়া সিটের তদন্তকারী অফিসারদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারবে না রাজ্য। অর্থাৎ তদন্ত চলাকালীন ওই অফিসারদের বদলি বা অন্য কোনও পদে বসাতে পারবে না রাজ্য। এমনকি এই তদন্ত চলাকালীন অন্য সব কাজ থেকে তাঁদের অব্যাহতি দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। নির্দেশে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, তদন্তের স্বার্থে সিবিআই ও সিটকে যথাযথ সাহায্য করতে হবে রাজ্যকে। সব মিলিয়ে হাই কোর্টের এই রায় রাজ্যের পক্ষে বেশ অস্বস্তিকর বলাই যায়।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন তাদের রিপোর্টে শাসক দলের দুই নেতা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও বিধায়ক পার্থ ভৌমিককে ‘কুখ্যাত দুষ্কৃতী’ বলে উল্লেখ করেছিল। আদালত অবশ্য তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানায়নি। এই মামলায় যুক্ত হতে চেয়ে তাঁরা যে আবেদন করেছিলেন তা খারিজ করে দিয়েছেন বিচারপতিরা। তদন্তের পর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে অন্য একটি ডিভিশন বেঞ্চে। হাই কোর্টের ‘রোস্টার’ অনুযায়ী ৪ অক্টোবর বর্ষীয়ান বিচারপতিদের বেঞ্চে পরবর্তী শুনানি হবে।
সূত্র : আনন্দবাজার
এন এইচ, ১৯ আগস্ট