গাড়ি ও হেলিকপ্টার ভর্তি অর্থ নিয়ে পালিয়েছেন আফগান প্রেসিডেন্ট
কাবুল, ১৬ আগস্ট – কাবুলে রাশিয়ার দূতাবাস সোমবার জানিয়েছে, আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি চারটি গাড়ি, একটি হেলিকপ্টার ভর্তি অর্থ নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। রুশ বার্তাসংস্থা রিয়ার বরাত দিয়ে এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
কাবুলে রুশ দূতাবাসের মুখপাত্র নিকিতা ইশচেনকো বলেন, ‘শাসনের অবসানের প্রেক্ষাপটে আফগানিস্তান থেকে ঘানির এভাবে পালিয়ে যাওয়াটা বেশ আলঙ্কারিকভাবে মানিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘তিনটি গাড়ি ছিল অর্থে ভর্তি; তারা আরো কিছু অর্থ হেলিকপ্টারে ভরার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সেখানে সবটুকু রাখা যায়নি। কিছু অর্থ বিমানবন্দরের টার্মাকে ফেলে রাখা অবস্থায় ছিল।’
নিকিতা ইশচেনকো বার্তাসংস্থা রয়টার্সকেও এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ঘটনাটির প্রত্যক্ষদর্শীও তার কাছে রয়েছেন। তবে রয়টার্স এ খবর যাচাই করে দেখতে পারেনি।
রোববার তালেবানদের কাবুল দখলের প্রেক্ষাপটে আফগানিস্তান ছেড়ে পালান আশরাফ ঘানি। ইতোমধ্যে কাবুলে প্রেসিডেন্ট ভবন নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তালেবান। কাবুল ছাড়াও আফগানিস্তানের অধিকাংশ জেলা এখন তালেবানদের দখলে।
রোববার যখন তালেবানরা ক্রমে কাবুল দখলে নিচ্ছিল, তখনই দেশ ছেড়ে পালান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। এ নিয়ে তার সরকারের কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ রয়েছে। কারণ, তারা পড়েছেন চরম বিপাকে।
আফগানিস্তান সরকারের হয়ে কাজ করা জাতীয় পুনর্মিলন কাউন্সিলের প্রধান আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট দেশ ছেড়েছেন; দেশকে কঠিন পরিস্থিতিতে রেখেই তিনি দেশ ছেড়েছেন।’ তিনি অভিশাপ দেয়ার সুরে বলেন, ‘আল্লাহ তার এ কৃতকর্মের হিসেব চাইবেন।’
পরে আশরাফ ঘানি এক ফেসবুক পোস্টে লিখেন, কাবুলে রক্তপাত এড়াতেই তিনি দেশ ছেড়েছেন। তবে তিনি কোথায় আছেন, সে কথা জানাননি। স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, প্রতিবেশি তাজিকিস্তানে পালিয়ে গেছেন ঘানি।
যদি তিনি দেশে থাকতেন, তাহলে কি হতো, সে সম্পর্কে আশরাফ ঘানি লিখেছেন, ‘অগণিত দেশপ্রেমিক শহীদ হতেন এবং কাবুল ধংস হয়ে যেতো।’ তিনি লিখেন, ‘তালেবানরা জয়ী হয়েছেন। এবার দেশের মানুষের রক্ষা করা, তাদের সম্পদ ও সম্মান রক্ষার দায়িত্বও এখন তালেবানের।’
পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার অনলাইন জানায়, আফগানিস্তান ছেড়ে পালিয়ে আশরাফ ঘানি তাজিকিস্তানে গেলেও দেশটি সেখানে তাকে আশ্রয় দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। বর্তমানে তিনি ওমানে পৌঁছেছেন। ওমান সরকার তাকে আশ্রয় দিতে রাজি হয়েছে কি না, এখনও পর্যন্ত তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। তবে সোমবার ওমানেই অবস্থান করছেন বলে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে।
জানা গেছে, ওমান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দিতে পারেন ঘানি। ওমানে তার সঙ্গে রয়েছেন আফগানিস্তানের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হামিদুল্লা মোহিব। তালিবানের সামনে কখনও মাথা নত করবেন না বলে বার্তা দিলেও সদ্য সাবেক হওয়া উপ-রাষ্ট্রপতি আমরুল্লা সালেহ রয়েছেন তাজিকিস্তানে।
সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
এম ইউ/১৬ আগস্ট ২০২১