জাতিসংঘে আফগানিস্তান নিয়ে সরব ভারত
নয়াদিল্লি, ১৬ আগস্ট – কাবুলের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ এখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে। দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। এ অবস্থায় তালেবানের আনুষ্ঠানিক সরকার গঠন এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা। সোমবার পরিবর্তিত পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠক হওয়ার কথা। সূত্র জানাচ্ছে, তার আগেই ভারত জাতিসংঘে নিজেদের অবস্থান খানিকটা স্পষ্ট করে দিয়েছে।
ভারত জানিয়েছে, তালেবান সরকার গঠন করলে স্বীকৃতি দিয়ে চায় না দিল্লি। বস্তুত ভারত ছাড়াও অনেক দেশই একই রকম মনোভাব পোষণ করে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নোটিস দিয়ে জানিয়েছে, সোমবার থেকে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের যুক্তরাষ্ট্র সফর শুরু হচ্ছে। নিরাপত্তা পরিষদে দুটি আলোচনা সভায় তার নেতৃত্ব দেওয়ার কথা রয়েছে। যার একটি ১৮ তারিখে এবং অন্যটি ১৯ তারিখে। ১৮ আগস্টের সভা সন্ত্রাসবাদ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা নিয়ে হওয়ার কথা। সন্ত্রাসবাদ কীভাবে আন্তর্জাতিক শান্তি বিঘ্নিত করছে তা নিয়ে দ্বিতীয় সভা হওয়ার কথা রয়েছে।
কূটনীতিকদের বক্তব্য, দুই সভাতেই তালেবান প্রসঙ্গ সামনে আসবে। সেখানে আন্তর্জাতিক কূটনীতি কীভাবে তালেবান সরকারের বিষয়টিকে দেখবে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
প্রথম থেকেই তালেবান নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে ভারত। আফগানিস্তানে তালেবান সরকার গঠন করলে তার প্রভাব ভারতীয় উপমহাদেশ অঞ্চলে কীভাবে পড়বে, দিল্লি বরাবরই তা নিয়ে চিন্তিত। এর আগে আফগানিস্তানে তালেবান যখন সরকার গঠন করেছে, ভারত তা সমর্থন করেনি। বস্তুত, বিশ্বের বহু দেশই তা সমর্থন করেনি। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে কোন দেশ কী অবস্থান নেয়, এবারের জাতিসংঘের বৈঠকে তা অনেকটাই স্পষ্ট হবে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
জাতিসংঘের দুই বৈঠকের বাইরে একাধিক দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তালেবান ইস্যুতে পৃথক বৈঠক হতে পারে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। কূটনীতিকদের বক্তব্য, আশরাফ ঘানির আফগান প্রশাসনের সঙ্গে দিল্লির অত্যন্ত সুসম্পর্ক ছিল। ভারত দেশটিকে বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ করেছে। আফগান বাহিনীর উন্নয়নেও অর্থ ব্যয় করেছে।
আশরাফ ঘানির আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক কম-বেশি সবারই জানা। এর আগে হামিদ কারজাইয়ের আমলেও দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিল।
সূত্র জানাচ্ছে, তালেবান কাবুল দখল করার পর আশরাফ ঘানি সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ভারতে পালিয়ে এসেছেন বা আসার চেষ্টা করছেন। ভিসার তালিকায় আরও বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম আছে বলে জানা গেছে।
ইতোমধ্যে ভারতে পৌঁছেছেন ওয়াহিদুল্লাহ কলিমজাই, আব্দুল আজিজ হাকিমি, আব্দুল কাদির জাজাই, মালেম লালা গুল, জামিল কারজাই, শুকরিয়া এসাখেইল প্রমুখ। এদের মধ্যে অনেকেই ঘানি সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।
বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে জয়শঙ্করের যুক্তরাষ্ট্র সফর নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। জাতিসংঘের বৈঠকের পর আফগানিস্তান নিয়ে দিল্লির অবস্থান আরও স্পষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে তার আগেই দেশটি থেকে ভারত সব কূটনীতিক ও দূতাবাস কর্মীকে ফিরিয়ে নেবে বলে জানা গেছে। সূত্র: ডয়চে ভেলে।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
এম ইউ/১৬ আগস্ট ২০২১