দক্ষিণ এশিয়া

আশরাফ ঘানি কোথায় আছেন?

কাবুল, ১৬ আগস্ট – তালেবানদের কাবুল দখলের প্রেক্ষাপটে আফগানিস্তান ছেড়ে পালিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। ইতোমধ্যে কাবুলে প্রেসিডেন্ট ভবন নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তালেবান। প্রশ্ন উঠছে, এখন কোথায় আছেন আশরাফ ঘানি? তিনি কি পশ্চিমা মিত্রদের কারো কাছে আশ্রয় নিয়েছেন, নাকি প্রতিবেশি কোনো দেশে?

কাবুল ছাড়াও আফগানিস্তানের অধিকাংশ জেলা এখন তালেবানদের দখলে। কাবুলে তালেবানদের প্রবেশের পর সেখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেক আফগান দেশ ছাড়তে বিমানবন্দরে জড়ো হতে শুরু করেন। এতে এক বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

হেলিকপ্টার দিয়ে মার্কিন দূতাবাস থেকে কর্মকর্তা কর্মচারীদের সরিয়ে নেয়া হয়। আল জাজিরা জানিয়েছে, দূতাবাস ভবন থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, কর্মকর্তারা গুরুত্বপূর্ণ নথি পুড়িয়ে ফেলছেন।

যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও অন্য অনেক দেশ কাবুলে তাদের দূতাবাস থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিচ্ছে। অনেক আফগানের শঙ্কা, তালেবানরা আবারও তাদের দেশে নির্মম শাসন জারি করবে।

রোববার যখন তালেবানরা ক্রমে কাবুল দখলে নিচ্ছিল, তখনই দেশ ছেড়ে পালান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। এ নিয়ে তার সরকারের কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ রয়েছে। কারণ, তারা পড়েছেন চরম বিপাকে।

আফগানিস্তান সরকারের হয়ে কাজ করা জাতীয় পুনর্মিলন কাউন্সিলের প্রধান আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট দেশ ছেড়েছেন; দেশকে কঠিন পরিস্থিতিতে রেখেই তিনি দেশ ছেড়েছেন।’ তিনি অভিশাপ দেয়ার সুরে বলেন, ‘আল্লাহ তার এ কৃতকর্মের হিসেব চাইবেন।’

পরে আশরাফ ঘানি এক ফেসবুক পোস্টে লিখেন, কাবুলে রক্তপাত এড়াতেই তিনি দেশ ছেড়েছেন। তবে তিনি কোথায় আছেন, সে কথা জানাননি। স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, প্রতিবেশি তাজিকিস্তানে পালিয়ে গেছেন ঘানি।

যদি তিনি দেশে থাকতেন, তাহলে কি হতো, সে সম্পর্কে আশরাফ ঘানি লিখেছেন, ‘অগণিত দেশপ্রেমিক শহীদ হতেন এবং কাবুল ধংস হয়ে যেতো।’

তিনি লিখেন, ‘তালেবানরা জয়ী হয়েছেন। এবার দেশের মানুষের রক্ষা করা, তাদের সম্পদ ও সম্মান রক্ষার দায়িত্বও এখন তালেবানের।’

পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার অনলাইন জানায়, আফগানিস্তান ছেড়ে পালিয়ে আশরাফ ঘানি তাজিকিস্তানে গেলেও দেশটি সেখানে তাকে আশ্রয় দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। বর্তমানে তিনি ওমানে পৌঁছেছেন। ওমান সরকার তাকে আশ্রয় দিতে রাজি হয়েছে কি না, এখনও পর্যন্ত তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। তবে সোমবার ওমানেই অবস্থান করছেন বলে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে।

জানা গেছে, ওমান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দিতে পারেন ঘানি। ওমানে তার সঙ্গে রয়েছেন আফগানিস্তানের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হামিদুল্লা মোহিব। তালিবানের সামনে কখনও মাথা নত করবেন না বলে বার্তা দিলেও সদ্য সাবেক হওয়া উপ-রাষ্ট্রপতি আমরুল্লা সালেহ রয়েছেন তাজিকিস্তানে।

অন্য দিকে, আফগানিস্তানের আর এক সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই এখনও দেশেই আছেন। আফগানিস্তানে পূর্ণ এবং সার্বিক সরকার গঠনের জন্য তালিবানের সঙ্গে সমঝোতা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

একসময় দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ছিলেন ঘানি। ২০১৪ সালে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে সেই নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন তিনি। তবে তার স্ত্রী এবং দুই সন্তান যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তাই শেষ পর্যন্ত ঘানি যুক্তরাষ্ট্রেই আশ্রয় নেবেন, এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে।

সূত্র : বাংলাদেশ জার্নাল
এন এইচ, ১৬ আগস্ট

Back to top button