দক্ষিণ এশিয়া

আফগান দোভাষীরা মহাবিপদে

কাবুল, ১৬ আগস্ট – অনেকটা টালমাটাল অবস্থায় আফগান পরিস্থিতির। যুক্তরাষ্ট্র সৈন্যদের সরিয়ে নেওয়ার পর একের পর এক বিজয় অর্জন করছে তালেবান। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির বিস্তীর্ণ এলাকার পর এখন রাজধানী কাবুলও তালেবানদের দখলে এসে গেছে। অনেকটা দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানী।

তালেবানদের হাতে একের পর এক এলাকা দখলের পর বিপাকে পড়েছে সরকারি বাহিনী। তবে সবচেয়ে বেশি বিপদে আফগান দোভাষী। তারা বিদেশি সৈন্যদের হয়ে কাজ করতেন। প্রাণ ভিক্ষা চেয়েও রক্ষা হচ্ছে না অনেকের। তাদেরই একজনের নাম হাজী। যিনি আমেরিকান সৈন্যদের সাহায্য করার জন্য কাজ করতেন।

সিএনএন’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হাজী বলেন, “অনেক বছর আমি এবং আমার স্ত্রীর ভালো ঘুম হয়েছে। কিন্তু এখন সারারাত আমার স্ত্রী জেগে থাকে।”

“সে ভয় পেয়েছে। যদি সে শুনতে পায় কেউ আসছে, সে আমাকে ডাকছে, হাজী, কেউ আসছে!” যোগ করেন এ দোভাষী।

“যদি (তালেবান) আমাকে খুঁজে পায়, তারা আমাকে হত্যা করবে এবং তারা আমার পরিবারকে হত্যা করবে কারণ আমি মার্কিন মেরিনদের সাথে দোভাষী ছিলাম।”

অনেকটা আতঙ্কের সুরে হাজীর স্ত্রী বলেন, দরজায় কোন শব্দ হলে তিনি প্রথম যে কাজটি করেন তা হলো সন্তানদের আড়াল করা। তারপর আমি উঠে দরজায় গিয়ে দেখি কি হচ্ছে। যদি তালেবান থাকে, আমি তাদের বলি বাড়িতে কেউ নেই।

জানা যায়, হাজী হেলমান্দ প্রদেশে বাস করতেন এবং মেরিন-সেনাবাহিনীর সাথে টহল দিয়েছিলেন, তাদের হয়ে কাজ করেছেন তিনি। এরপর থেকে মার্কিন প্রতি তার আনুগত্য তৈরি হয়েছে।

এদিকে ভয়ে আত্মগোপনে আছেন তিনি এবং তার পরিবার। তালেবানদের হাতে আসা প্রতিটি প্রদেশের খবরের সাথে আরও বেড়েছে তাদের প্রতিশোধের ভয়।

অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র সৈন্যদের সাহায্য করার জন্য তালেবানের হাতে জীবন বিপন্ন হতে পারে, এমন বেশ কিছু আফগান দোভাষী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

মূলত তালেবানরা জোট বাহিনীকে সাহায্যকারী আফগানদের খুঁজে খুঁজে হত্যা করছে এবং হাজীর মতো হাজার হাজার দোভাষী তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১০ বছর আগে আফগানিস্তানে ইউএস মেরিন কর্পসের সাথে এমবিএড কাজ করার সময় সিএনএনের সাথে প্রথম দেখা হয় হাজীর। কিন্তু এবারে মার্কিন পত্রিকাটির সাথে সাক্ষাৎকারের অভিজ্ঞতাতি ছিল পুরো ভিন্ন।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
এম ইউ/১৬ আগস্ট ২০২১

Back to top button