জাতীয়

মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ৫০.৪০ শতাংশ

তৌফিকুল ইসলাম

ঢাকা, ২৪ অক্টোবর- করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারি পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে অর্ধেকের বেশি (প্রায় ১১.০০ কিলোমিটার) ভায়াডাক্ট দৃশ্যমান হয়েছে। ডিপোর অভ্যন্তরে ২.৭০ কিলোমিটার Ballasted রেল লাইন বসানো হয়েছে। ডিপোর অভ্যন্তরে মোট ৫২ টি অবকাঠামো নির্মাণ কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ডিপো এলাকার পূর্ত কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭৩ শতাংশ। মেট্রোরেলে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে হয়েছে ৫০.৪০ শতাংশ।

রাজধানীর যানজট কমাতে ও নগরবাসীর যাতায়াত আরামদায়ক দ্রুততর নির্বিঘ্ন করতে মেট্রোরেল নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে যাত্রী নিয়ে ছুটবে মেট্রো ট্রেনে। উভয়দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন বহনে সক্ষমতা থাকবে মেট্রোরেলের।


প্রকল্পের অগ্রগতির খোঁজ নিয়ে জানা যায়,বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল ২২.১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যা রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত কাজ চলমান রয়েছে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭৬.৩৭ শতাংশ। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৪৩.৪৬ শতাংশ।

তাছাড়া, ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল সিস্টেম এবং রোলিং স্টক (রেলকোচ) এবং ডিপো ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ কাজের সমন্বিত অগ্রগতি হয়েছে ৩৪.৭৪ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত এমআরটি লাইন-৬ এর বর্ধিত করার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই অংশের দৈর্ঘ্য ১.১৬কিলোমিটার।


প্রকল্প থেকে জানা যায়, উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১.৭৩ কিলোমিটার ভারপ্রাপ্ত এবং ৯ টি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। ৯টি স্টেশনের সাবস্ট্রাকচার নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। উত্তরা সেন্টার ও উত্তরা দক্ষিণ স্টেশনের কনস্ট্রাকশন ছাদ নির্মাণ সমাপ্ত হয়েছে। বর্তমানে উত্তরা উত্তর, পল্লবী, কাজীপাড়া এবং শেওড়াপাড়ায় স্টেশনের কনস্ট্রাকশনস নির্মাণের কাজ চলছে। তাছাড়া উত্তরা সেন্টার স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম নির্মাণের কাজ চলমান আছে। উত্তরা সেন্টার ও উত্তরা দক্ষিণ স্টেশনের মেকানিক্যাল ইলেকট্রিক্যাল ও প্লাম্বিং এর কাজ শুরু হয়েছে।

একইসাথে আগারগাঁও থেকে কারওয়ান বাজার পর্যন্ত ৩.১৯৫ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট ও ৩ টি স্টেশন নির্মাণ কাজ চলমান আছে। তাছাড়াও এই অংশে পিয়ার কলাম, পাইল ক্যাপ, ফ্রামগেট স্টেশন নির্মাণ, পিয়ার হেড, প্রিকাস্ট সেগমেন্টসহ নানা কাজ চলমান রয়েছে।

কারওয়ান বাজার থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ৪.৯২২ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট ও ৪ টি স্টেশনের নির্মাণ করা হবে। এই অংশে পরিষেবা স্থানান্তর, চেকরোবিং, ট্রায়াল ট্রেঞ্চ, টেস্ট পাইল এবং সকল স্থায়ী বোরড পাইল নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। তাছাড়াও পিয়ার কলাম, বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনের সাবস্ট্রাকচার নির্মাণ কাজ,পাইল ক্যাপ, পিয়ার হেড, সেগমেন্ট এর নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।

মেট্রো ট্রেনের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এন এ ছিদ্দিক এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘জাপানে মেট্রো ট্রেনের নির্মাণকাজ চলছে। ইতিমধ্যেই দুটি ট্রেনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। আরও তিনটি মেট্রো টেনের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। বাংলাদেশ এবং জাপান উভয় দেশের করোনা পরিস্থিতির উপর বিবেচনা করে এই পাঁচটি ট্রেন একবারে দেশে নিয়ে আসা হবে। সে ক্ষেত্রে বর্তমানে বাংলাদেশে এবং জাপানের করোনা পরিস্থিতি এই অবস্থায় যদি বিরাজ করে তাহলে আমরা আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে নিয়ে আসতে পারবো পাঁচটি মেট্রো ট্রেন’।


তিনি আরও বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির পর কাজ এখন পুরোদমে চলছে। চলমান করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রথম পর্যায়ে গাবতলী কনস্ট্রাকশন ইয়ারে ১০ শয্যা বিশিষ্ট এবং উত্তরাস্থ পঞ্চবটি কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে ১৪ শয্যাবিশিষ্ট হসপিটাল নির্মাণ করা হয়েছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, সকল পর্যায়ের জনবলে কাজে যোগদানের জন্য কোভিড-১৯ এর উপসর্গ আছে কিনা তা যাচাই বাছাই করা হয়, তারপরেই কাজে যোগদানের অনুমতি দেওয়া হয়’।

উল্লেখ্য, এমআরটি লাইন-৬ নামে মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ ২০১২ সালের জুলাইয়ে শুরু হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ৫ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা এবং জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) ঋণ থেকে ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা ব্যয় হবে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মেট্রেরেল চালুর পরিকল্পনা আছে সরকারের।

সূত্র : বার্তা২৪

আর/০৮:১৪/২৪ অক্টোবর

Back to top button