সিলেট

রায়হানের মৃত্যু : আরো এক পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার

সিলেট, ২৪ অক্টোবর- সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান নিহত হওয়ার ঘটনায় হারুনুর রশিদ নামে আরো এক পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) রাতে সিলেট পুলিশ লাইন্স থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার হারুনুর রশিদ বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে কনস্টেবল হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় গত ১৩ অক্টোবর তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেটের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহাম্মদ খালেদ-উজ-জামান আজ শনিবার (২৪ অক্টোবর) কনস্টেবল হারুনুর রশিদকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

খালেদ-উজ-জামান জানান, গতরাতে সিলেট পুলিশ লাইন্স থেকে হারুনুর রশিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ শনিবার তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে।

এ নিয়ে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুইজনকে গ্রেপ্তার করল পিবিআই। এর আগে কনস্টেবল টিটু চন্দ্রকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি পাঁচ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।

গত ১১ অক্টোবর ভোরে পুলিশের নির্যাতনে রায়হান উদ্দিন (৩৩) নামের এক যুবক নিহত হন বলে অভিযোগ তোলেন তাঁর স্বজনরা। নিহত ওই যুবক সিলেটের আখালিয়ার নেহারিপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে।

পুলিশের পক্ষ থেকে প্রথমে দাবি করা হয়, ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে মারা গেছেন রায়হান। তবে তাঁর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, পুলিশ ধরে নিয়ে নির্যাতন করে রায়হানকে হত্যা করেছে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি করে সিলেট মহানগর পুলিশ। তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পায়।

ওই ঘটনায় এরপর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একই সঙ্গে তিন পুলিশ সদস্যকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করা হয়। ঘটনার পর থেকে এসআই আকবর পলাতক।

এদিকে রায়হান হত্যার ঘটনার রাতেই নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটির তদন্তভার পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গত ১৪ অক্টোবর থেকে তদন্ত শুরু করে পিবিআই। পরদিন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে রায়হানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্ত করা হয়। এর এক সপ্তাহ পর ২২ অক্টোবর প্রতিবেদন দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন:  মৌলভীবাজারে পরিত্যক্ত গ্রেনেড উদ্ধার

দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের সঙ্গে প্রথম প্রতিবেদনের সামঞ্জস্য পায় ফরেনসিক মেডিক্যাল বোর্ড। অতিরিক্ত আঘাতের কারণে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. মো. শামসুল ইসলাম। তিনি জানান, ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতের জখমই তার শরীরে বেশি ছিল। তবে এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি ফরেনসিক বিভাগের ওই কর্মকর্তা।

রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় গত ২০ অক্টোবর দুপুরে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমদ হত্যা মামলায় ওই ফাঁড়ির পুলিশ কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে গ্রেপ্তারের পর পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। টিটু বন্দরবাজার ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। রায়হানের মৃত্যুর জন্য দায়িত্বহীনতার দায়ে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূইয়া, পুলিশ সদস্য টিটুসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে তাদের পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।

এছাড়া গত ২১ অক্টোবর এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (সাময়িক বরখাস্ত) উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে ফাঁড়ি থেকে পালাতে সহায়তা করা ও তথ্য গোপনের অপরাধে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির টু আইসি এসআই হাসান উদ্দিনকে।

সূত্র: কালের কণ্ঠ

আর/০৮:১৪/২৪ অক্টোবর

Back to top button