ঢাকা

অনলাইনে বোমা তৈরির প্রশিক্ষক ফোরকান গ্রেফতার

ঢাকা, ১১ আগস্ট – নব্য জেএমবি’র সামরিক শাখার প্রধান প্রশিক্ষক ও বোমা প্রস্তুতকারকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।

বুধবার দুপুর ১২টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সিটিটিসির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মো. জাহিদ হাসান ওরফে রাজু ওরফে ইসমাঈল হাসান ওরফে ফোরকান, সাইফুল ইসলাম মারুফ ওরফে বাসিরা ও মো. রুম্মান হোসেন ফাহাদ ওরফে আব্দুল্লাহ।

গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে বিস্ফোরক পদার্থ, ঢাকনাযুক্ত জিআই পাইপ, রিমোট কন্ট্রোল ডিভাইস, লোহার বল, সাংগঠনিক কাজে ব্যবহৃত ৩টি মোবাইল ফোন ও ১টি ট্যাব উদ্ধার করা হয়।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর কাফরুল থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করে সিটিটিসির বোম ডিসপোজাল ইউনিটের একটি টিম।

এ বিষয়ে সিটিটিসির প্রধান বলেন, গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত মো. জাহিদ হাসান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হতে রসায়নে অনার্স সম্পন্ন করেছে। জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হওয়ায় এবং হিজরত করায় মাস্টার্স সম্পন্ন করতে পারেনি। ২০১৬ সালে অনলাইনে ‘হোয়াইট হাউজের মুফতি’ নামক আইডি’র মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে নব্য জেএমবি’র তৎকালীন আমির মুসার হাত ধরে সে এই সংগঠনে যোগদান করে। আমির মুসার সাথে কাজ করার সুবাদে সংগঠনের ওই সময়ের শীর্ষস্থানীয় জঙ্গিদের নজরে আসে এবং তাদের সার্বক্ষণিক সঙ্গী হিসেবে কাজ করে।

তিনি আরও বলেন, রসায়নে পরদর্শী হওয়ার কারণে তার মেধা এবং সাহসের জন্য তাকে এই সংগঠনের সামরিক শাখার সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। রসায়নের ছাত্র হওয়ার সুবাদে সে অল্পদিনে গ্রেনেড ও বোমা বানানোর অত্যন্ত দক্ষ হয়ে ওঠে এবং নিত্য নতুন কৌশলে আইইডি (ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) প্রস্তুত করে। এই সংগঠনের যারা বোমা ও গ্রেনেড তৈরি করতো তাদেরকে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিত সে।

তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানে নব্য জিএমবি’র শীর্ষস্থানীয় জঙ্গিরা গ্রেফতার/নিহত হলে এই সংগঠনটি সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। এ সময় গ্রেফতারকৃত জাহিদ গ্রেফতার এড়ানোর জন্য আত্মগোপনে চলে যায়। পূনরায় সে নতুন আমিরের নেতৃত্বে সংগঠনকে সংগঠিত করার উদ্যোগ নেয়। তারই অংশ হিসেবে অনলাইনে আইডি খোলার মাধ্যমে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে যারা অত্যন্ত সাহসী ও সামরিক বিভাগে কাজ করতে আগ্রহী তাদের মধ্য থেকে বাছাইকৃত সদস্যদের বিভিন্ন ধরনের টাইম ও রিমোট কন্ট্রোল বোমা তৈরীর প্রশিক্ষণ দিত।

মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সর্বশেষ সে ড্রোন বানানোর পরিকল্পনা করেছিল। ড্রোনের সাথে এক্সপ্লোসিভ যুক্ত করে কোন জায়গায় আক্রমণের পরিকল্পনার পাশাপাশি সামরিক শাখার প্রধান নিযুক্ত হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, পুলিশ বক্সে হামলার পরিকল্পনার সাথেও সে জড়িত ছিল। সে আমিরের নির্দেশে যেসকল হামলার ঘটনা ঘটেছে সেসকল হামলায় সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেছে।

সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গ্রেফতারকৃত অপর অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম মারুফ একজন দক্ষ বোমা তৈরির কারিগর। সে অনলাইনে জাহিদের নিকট হতে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় মামলা রুজু হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

সূত্র: ডিএমপি নিউজ
এন এ/ ১১ আগস্ট

Back to top button