পশ্চিমবঙ্গ

কলকাতা পুরসভায় আবারও দেবাঞ্জনকাণ্ডের ছায়া!

কলকাতা, ০৯ আগস্ট – আবারও শহরে দেবাঞ্জন-কাণ্ডের পুনরাবৃত্তির অভিযোগ। এবার ভুয়ো টিকাপ্রদান নয় ঠিকই, তবে কলকাতা পুরসভায় চাকরি দেওয়ার নামে ৫০ লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় সোমবার দু’জনকে গ্রেফতার করে নিউ মার্কেট থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম অমিতাভ বোস ও দিব্যেন্দু বর্ধন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুরে অভিযুক্তদের মধ্যে একজন কলকাতা পুরসভায় যান। তবে তাঁর আগেই চাকরি পাবেন বলে টাকা দিয়েছিলেন যাঁরা, তাঁরা নিয়োগপত্র নিয়ে সেখানে হাজির হন। প্রত্যেকের হাতে পুরসভার লেটার হেডে নিয়োগপত্র ছিল। তাতেই সন্দেহ হয় পুরসভার ভিতরে কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়ারদের।

এরপর পুরসভার আধিকারিকরা সেই কাগজ খতিয়ে দেখেন। দেখা যায় পুরোটাই জাল। এরপরই প্রতারকদের মধ্যে একজন পুরসভায় আসেন। এদিকে চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশও তৈরি ছিল। অভিযুক্ত পুরসভার ভিতরে ঢুকতেই তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে আটক করা হয়। এরপরই তিন তলায় তাঁকে নিয়ে গিয়ে একটি ঘরে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। চড় থাপ্পড়ও মারে পুলিশ। এরপরই নিজের দোষ স্বীকার করেন তিনি। নিজের মুখেই কৃতকর্মের কথা জানান। পুরসভার কর্মিবর্গ বিভাগ এবং অ্যাসেসমেন্ট বিভাগে আধিকারিক এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বলেও পুলিশকে তিনি জানান। একটি ছবিও দেখান মোবাইলে।

এরপরই পুলিশ অভিযুক্তকে নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে যায়। অভিযুক্তের মোবাইলে থাকা ছবিগুলি ওই বিভাগের আধিকারিকদের দেখায়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিভাগে এরকম দেখতে কোনও আধিকারিক বা কর্মী ছিল না বলেই সেখানকার কর্মীরা পুলিশকে জানান। এরপরই অভিযুক্ত বলেন, তাঁরই এক সহকর্মী গ্র্যান্ড হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এরপর পুলিশ সেখানেও যায়।

কিন্তু পুলিশের তৎপরতা দেখে অপরজন সেখান থেকে পালিয়ে যান। পরে প্রথমজনকে ঢাল করেই দ্বিতীয় জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই চক্রের সঙ্গে পুরসভার অন্দরমহলের বেশ কয়েকজন যুক্ত রয়েছে বলে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছে। তাদের সম্পর্কে জানতে দু’জনকে জেরাও করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেন, “আমি তো এখানে সিআইডি লাগিয়ে দিতে পারি না। যে বেআইনি ভাবে টাকা নিচ্ছে সে তো অবশ্যই দোষী। তার জেল হওয়া উচিৎ। কিন্তু যে দিচ্ছে সেও দোষী। ঘুষ দিয়ে সবাইকে টপকে যে চাকরি চাইছে সেও সমান দোষী। দ্বিতীয়ত, আমি বার বার বলেছি মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশন বা পাবলিক সার্ভিস কমিশন ছাড়া সরকারি চাকরি বা পুরসভায় কেউ চাকরি দিতে পারে না। সে এক্তিয়ার কমিশনেরও নেই, মেয়রেরও নেই। এটা মানুষকে বুঝতে হবে। এটা আগে ছিল। পাড়ার স্কুলে কেউ ঢুকল। তাঁকে শিক্ষিকা করে দিল। এখন স্কুল সার্ভিস কমিশন ছাড়া কোনও চাকরি নেই। যাঁরা করছেন, তাঁরা ইচ্ছা করে ঠকতে চাইছেন। তাই এসব প্রতারণার ফাঁদে পা দিচ্ছেন।”

এম এউ, ০৯ আগস্ট

Back to top button