পটুয়াখালী

স্বাস্থ্যকর্মীকে পিটিয়ে ফের আলোচনায় সেই চেয়ারম্যান!

পটুয়াখালী, ০৮ আগস্ট – সালিস বসিয়ে কিশোরীকে বিয়ে করা পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সমালোচিত কনকদিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার এবার পিটালেন ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকর্মীকে। গতকাল শনিবার সকাল ১১টায় পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে তার ইচ্ছানুযায়ী করোনার টিকা না দেওয়ায় দুই হাতে কিল-ঘুষি আর লাথি মেরে অজ্ঞান করে দেন স্বাস্থ্যকর্মীকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আহত ওই স্বাস্থ্যকর্মীর নাম আল আমিন সিকদার। তিনি ওই ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কর্মরত। আল আমিন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।

এ সময় ওই চেয়ারম্যান নারী স্বাস্থ্যকর্মী ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসারকেও গালাগাল করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আল আমিন সিকদার বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন করে আমরা কনকদিয়া ইউনিয়নে ৬০০ জনকে করোনা ভ্যাকসিন দেব। এ জন্য সব আয়োজন সম্পন্ন করে কার্যক্রম শুরু করি। কিন্তু চেয়ারম্যান সকাল ১১টার সময় এসে আমাদেরকে বলেন, “যারা ভ্যাকসিন নিতে আসছে তাদের ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি রেখে ভ্যাকসিন দিয়ে দেন।” আমি সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশনের কথা বললে তিনি (শাহীন চেয়ারম্যান) ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে দুই হাত দিয়ে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি এবং লাথি মারেন। আমি অজ্ঞান হয়ে ফ্লোরে পড়ে যাই। একপর্যায়ে আমার সহকর্মীদের সেবায় আমি সুস্থ হয়ে উঠি।’

ভুক্তভোগী নারী স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, ‘যে অশ্লীল ভাষায় আমাকে আর ইউএইচও স্যারকে গালাগালি করেছে তা মুখে শোভা পায় না।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, ‘আমার স্বাস্থ্যকর্মী আল আমিন সিকদার ভ্যাকসিন কার্যক্রম শেষ করে আমাকে রাতে ফোনে জানিয়েছেন। আমরা এ ব্যাপারে সরকারি বিধি অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেব।’

অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার বলেন, ‘নিজেদের দোষ ঢাকার জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। যারা আইডি কার্ড নিয়ে আসবে তারা টিকা পাবে। অথচ এখানে টিকা দিতে এসে স্বাস্থ্যকর্মীরা নিজেদের আত্মীয়-স্বজনকে টিকা দিচ্ছে। ফলে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় আমি এর প্রতিবাদ করেছি। কাউকে মারধর কিংবা গালাগালি করার অভিযোগ সত্য না।’

এর আগে, ২৫ জুন সালিস বৈঠকে এক কিশোরীকে বিয়ে করে ব্যাপক সমালোচিত হন চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার। এর আগে একাধিক সরকারি কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে মারধর করে ব্যাপক সমালোচিত হন। তিনি ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।

সূত্র: আমাদের সময়
এম ইউ/০৮ আগস্ট ২০২১

Back to top button