জাতীয়

ফেঞ্চুগঞ্জ শাহজালাল সার কারখানায় দুর্নীতি, দুদকের ১৫টি মামলা

সিলেট, ০৫ আগস্ট – সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে শাহজালাল সার কারখানা প্রকল্পে প্রায় ৩৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুই কর্মকর্তা ও ৮ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা হয়েছে। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে ভুয়া বিল ভাউচার করে পরস্পর যোগসাজশে এই টাকা আত্মসাত করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার দুদক সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এজহার হস্তান্তর করলে আদালত মামলাগুলো গ্রহণ করেন।

এর আগের দিন মঙ্গলবার দুদক সিলেটের উপ পরিচালক মো. নূর-ই-আলম বাদী হয়ে মামলাগুলো দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলেন, শাহজালাল ফার্টিলাইজার প্রকল্পের সাবেক সহকারী প্রধান হিসাবরক্ষক ও হিসাব বিভাগীয় প্রধান খন্দকার মুহাম্মদ ইকবাল, সাবেক রসায়নবিদ নেছার উদ্দিন আহমদ, মেসার্স টিআই ইন্টারন্যাশনালের স্বত্ত্বাধিকারী মোছা. হালিমা আক্তার, মেসার্স রাফী এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মো. নুরুল হোসেন, ফাল্গুনী টেড্রার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএসএম ইসমাঈল খান, মেসার্স আয়মান এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী সাইফুল হক, মেসার্স এন আহমদ এন্ড সন্স’র স্বত্ত্বাধিকারী নজির আহমদ বচন, মেসার্স মা এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মো. হেলাল উদ্দিন, মেসার্স ড্যাফোডিলস ইন্টারন্যাশনালের স্বত্ত্বাধিকারী মো. জামশেদুর রহমান খন্দকার ও মেসার্স সাকিব টেড্রার্সের স্বত্ত্বাধিকারী মো. আহসান উল্লাহ চৌধুরী।
এর মধ্যে সার কারখানার দুই কর্মকর্তা খন্দকার মুহাম্মদ ইকবাল ও নেছার উদ্দিন আহমদ বর্তমানে বরখাস্ত আছেন।

মামলাগুলোর এজহার সূত্রে জানা যায়, খন্দকার মুহাম্মদ ইকবাল ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন কাজের ৬০টি ভাউচার মূলে ৪৫ লাখ ৮৫ হাজার ৭৮৩ টাকা অগ্রিম উত্তোলন করেন। এর মধ্যে ২৩ লাখ ৭২ হাজার ৭৭৪ টাকার প্রকৃত বিল-ভাউচার দাখিল করেন। বাকি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৯ টাকার ভুয়া বিল-ভাউচার জমা দিয়ে অর্থ আত্মসাত করেন। নেছার উদ্দিন আহমদ একই সময়ে বিভিন্ন কাজের ৫৮টি ভুয়া বিল-ভাউচার দিয়ে ৯ লাখ ৮৩ হাজার ৬২০ টাকা আত্মসাত করেন।

ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রকল্পের ফটোকপি ও আপ্যায়ন বিলের নামে খন্দকার মুহাম্মদ ইকবাল ও নেছার উদ্দিন আহমদ মিলে ৪৪টি ভুয়া বিল-ভাউচারে ৩৯ লাখ ৫ হাজার ৬৫ টাকা আত্মসাত করেন। এছাড়া খন্দকার মুহাম্মদ ইকবাল নিজের স্ত্রী মোছা. হালিমা আক্তারের মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে ৩৭টি ভুয়া বিল-ভাউচারে ২৪ কোটি ৯৬ লাখ ৮৭১ টাকা, ঠিকাদার মো. আহসান উল্লাহ চৌধুরী ৪টি ভুয়া বিল-ভাউচারে ৪৫ লাখ ৩৭ হাজার ৮৭৫ টাকা, ঠিকাদার নুরুল হোসেন একাধিক প্রতিষ্ঠানের ৭টি ভুয়া বিল-ভাউচার এবং দোতলা সেলস অফিসের পূর্ত কাজের নামে ৫৬ লাখ ১ হাজার ৩৬৩ টাকা, ঠিকাদার এএসএম ইসমাঈল খান প্রকল্প পরিচালকের বাংলো ও সাইট অফিস মেরামত কাজের নামে ৫ লাখ ৩ হাজার ৬৬৬ টাকা, ঠিকাদার সাইদুল হক প্রকল্পের হাউজিং কলোনীর টয়লেটের সোয়ারেজ লাইন ও ওয়াটার সাপ্লাইয়ের লাইন কাজের নামে ৪ লাখ ১৩ হাজার ২০৯ টাকা, ঠিকাদার নাজির আহমদ বচন প্রকল্পের মার্কেট পার্ট-বি এর পূর্ত কাজের নামে ১৭ লাখ ৩৭ হাজার ৪৭১ টাকা, ঠিকাদার মো. হেলাল উদ্দিন ১৭টি ভুয়া বিল-ভাউচারে ৩ কোটি ১৮ লাখ ৯৮ হাজার ৪০২ টাকা, ঠিকাদার মো. জামশেদুর রহমান খন্দকার ৬০টি ভুয়া বিল-ভাউচারে ৯ কোটি ১০ লাখ ৪০ হাজার ৩৫১ টাকা, ঠিকাদার মো. হেলাল উদ্দিন ১৭টি ভুয়া বিল-ভাউচারে ৩ কোটি ১৮ লাখ ৯৮ হাজার ৪০২ টাকা আত্মসাত করেন।

সূত্র: বিডি-প্রতিদিন
এম ইউ/০৫ আগস্ট ২০২১

Back to top button