জাতীয়

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী না হলে মিলবে না মুক্তিযোদ্ধা ভাতা

এমরান হোসাইন শেখ

ঢাকা, ০৪ আগস্ট – মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী না হলে মিলবে না মুক্তিযোদ্ধা ভাতা। মিলবে না রেশনও। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত পৃথক দুটি নীতিমালা জারি করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

গত ২ আগস্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া স্বাক্ষরিত ‘শহীদ’ খেতাবপ্রাপ্ত ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা আদেশ ২০২১’ এবং ‘শহীদ’ খেতাবপ্রাপ্ত ও আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা রেশন আদেশ ২০২১’ পৃথক দুটি নীতিমালা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট আইন ২০১৮-এর (ধারা ৩) বিধান মতে এ দুটি নীতিমালা জারি করা হয়।

এই গেজেটে সম্মানী ভাতা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অযোগ্যতা হিসেবে উল্লেখ করা হয় যে কোনও সুবিধাভোগী ফৌজদারি অপরাধে ৬ (ছয়) মাসের বেশি সাজাপ্রাপ্ত হলে, তিনি সম্মানী ভাতা প্রাপ্য হবেন না। তবে শর্ত, সাজা হতে অব্যাহতি বা খালাসপ্রাপ্ত হলে যথারীতি সম্মানী ভাতা প্রাপ্য হবেন।

কোনও বীর মুক্তিযোদ্ধা বা যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা বা খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা বা সুবিধাভোগীগণ বা শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবিধাভোগী মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী না হলে সম্মানী ভাতা পাবেন না।

এদিকে রেশন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিধিমালায়ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী না হলে রেশন পাবেন না বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সংজ্ঞা হিসাবে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮-এর ধারা ২-এর উপধারা (১)-এর দফা ‘প’-এ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ওই সংজ্ঞায় বলা হয়- ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা- অর্থ যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সেই সকল আদর্শ।’

অবশ্য বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ কল্যাণ ট্রাস্ট আইন ২০১৮-এও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী না হলে কোনও ধরনের ভাতা প্রাপ্য হবেন না বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ওই আইনে বলা হয়, বীর মুক্তিযোদ্ধা বা যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা বা খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার উত্তরাধিকারীরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী না হলে সুবিধাভোগী হিসেবে গণ্য হবেন না।

অবশ্য সম্মানী ভাতা প্রাপ্তির অযোগ্যতা হিসেবে নতুন নীতিমালায় আরও কিছু বিধান রয়েছে। এগুলো হলো- মন্ত্রণালয় বা ট্রাস্ট নিম্নোক্ত কারণে প্রজ্ঞাপন বা সাধারণ আদেশের মাধ্যমে সাময়িকভাবে বা স্থায়ীভাবে সম্মানী ভাতা প্রদান বন্ধ করতে পারবে, যথা:

(ক) কোনও ব্যক্তি বীর মুক্তিযোদ্ধা নয় মর্মে মন্ত্রণালয় আদেশ প্রদান করা হলে; সম্মানী ভাতা বন্ধক, লিয়েন বা অন্য কোনোভাবে মর্টগেজ রেখে বাণিজ্যিক ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে ঋণ গ্রহণের পর ঋণখেলাপি হলে; বা সরকার থেকে কোনও প্লট, জমি, ফ্ল্যাট, বাড়ি বা স্থাপনা বরাদ্দপ্রাপ্ত হয়ে তার শর্ত লঙ্ঘন করলে।

নতুন নীতিমালায় ইলেকট্রনিক মানি ট্রান্সফার পদ্ধতিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্মানী ভাতা প্রদানের কথা বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, কল্যাণ ট্রাস্ট অনুযায়ী বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা বা তার উত্তরাধিকাররা সম্মানী ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।

এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধার অবর্তমানে স্ত্রী বা স্বামী; স্ত্রী বা স্বামীর অবর্তমানে বর্তমানে পিতা-মাতা; স্ত্রী-স্বামী বা পিতা-মাতার অবর্তমানে সন্তান এবং এদের সকলের অবর্তমানে ভাই-বোন ভাতা প্রাপ্য হবেন।

সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন
এম এউ, ০৪ আগস্ট

Back to top button