পশ্চিমবঙ্গ

বিধানসভা নির্বাচনের মুখে মাস্টারস্ট্রোক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা, ২৩ অক্টোবর- ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের মুখে মাস্টারস্ট্রোক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক সিদ্ধান্তেই পাহাড়ের সমীকরণ বদলে দিলেন। ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেল পাহাড়ের রাজনীতি। বিমল গুরুংকে কাছে টেনে মুকুল রায়দের এক ঝটকায় নিচে ফেলে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খেলা ঘুরিয়ে দিলেন পাহাড় রাজনীতির।

মমতার মস্ত চাল, বিমল গুরুংকেও কাছে টেনে নিলেন
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে তিনি মোর্চার বিনয় তামাং গোষ্ঠীকে কাছে টেনে নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন বিমল গুরুং, রোশন গিরিদের। কিন্তু ২০২১-এর আগে তিনি মস্ত চাল দিয়ে বিমল গুরুংদেরও কাছে টেনে নিলেন। ঠিক দুর্গাপুজোর আগে পঞ্চমীর সন্ধ্যায় দীর্ঘ তিন বছর পর বিমল গুরুংকে দেখা গেল শহরের রাস্তায়।

গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই
শুধু যে তাঁর দর্শন পেল পাহাড়, তা নয়। শহরের বুকে দাঁড়িয়ে বিমল গুরুং জানিয়ে দিলেন তাঁর গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সমর্থন করবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই। এতদিন যিনি ফেরার ছিলেন, তিনি ফিরেই কেন এমন সুর শোনালেন, তা বুঝতে অসুবিধা হয় না ওয়াকিবহাল মহলের। নেপথ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব খেলা ঘুরিয়ে দিয়েছেন।

মেঘ কেটে গিয়েছে, পাহাড় নিয়ে মমতা অনেক নিশ্চিন্ত
মমতার রাজনৈতিক চাতুর্যে পাহাড় ফের তৃণমূলের দিকে চলে গিয়েছে। ২০১৯-এর ভোটে যে শোচনীয় হাল হয়েছিল তৃণমূলের, তারপর গভীর চিন্তায় পড়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মেঘ কেটে গিয়েছে, পাহাড় থেকে দার্জিলিংয়ের সমতলের আসনগুলি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন অনেক নিশ্চিন্ত।

একটা মাস্টারস্ট্রোকেই পুরো খেলা ঘুরিয়ে দিলেন মমতা
কেন্দ্র বেশ কিছুদিন ধরেই পাহাড় নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করতে চাইছিল। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার চিঠিও এসেছে নবান্নে। কিন্তু একই মধ্যে একটা মাস্টারস্ট্রোকেই পুরো খেলা ঘুরিয়ে দিলেন। এবার পাহাড় রাজনীতি ফের অন্য খাতে বইবে। মুকুল রায়দের এক ঝটকায় পাহাড় থেকে নামিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

একুশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার দেখতে চান গুরুং
পাহাড়ের রাশ নিজের হাতে রেখে মমতা বুঝিয়ে দিলেন তাঁর কাছে বঙ্গ বিজেপি এখনও অনেক শিশু। রাজ্য রাজনীতিতে এখনও তিনি শেষ কথা। বিমল গুরুং শহরের বুকে দাঁড়িয়ে বলেন, তিনি একুশের বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারই দেখতে চান। তাঁর এই মন্তব্য আলোড়ন ফেলে দেয় রাজ্য রাজনীতিতে।

আরও পড়ুন: মমতার উপর ভরসা রাখার জন্য গুরুংকে স্বাগত জানাল তৃণমূল

পাহাড়ের মানুষের নীরব সমর্থন রয়েছে গুরুংয়ের প্রতি
বিমল গুরুংয়ের এই বার্তা বিজেপির কাছে মস্ত বড় ধাক্কা। কারণ এই বিমল গুরংয়ের সঙ্গে গোপন আঁতাতেই ২০১৯ লোকসভায় বিজেপি পাহাড়ে আধিপত্য বিস্তার করতে সমর্থ হয়েছে। এখন বিমল গুরুংয়ের মুখে মমতার প্রতি সমর্থন বাণী শোনার পর মুকুল রায়দের মাথায় হাত। কেননা বিমল গুরুং প্রমাণ করে দিয়েছেন এখনও পাহাড়ের মানুষের তাঁর প্রতি নীরব সমর্থন রয়েছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথা রাখেন, মোদী-শাহরা রাখেন না
গুরুংয়ের দাবি, পাহাড় এখনও তাঁর সঙ্গেই আছে। পাহাড়ের মানুষ তাঁর পাশেই দাঁড়াবেন। রাজ্যের রাজনীতি আর কেন্দ্রের রাজনীতি আকাশ-পাতাল ফারাক। আর তার থেকেও বড় কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর নিজের কথা রাখেন। কিন্তু মোদী-শাহরা তাঁদের কথা রাখেন না। তা বারবার প্রমাণিত হয়েছে। এই কথাতেই বিজেপি পড়েছে আরও বিপাকে।

গুরুং ফ্যাক্টর কাজ করবে পাহাড় ছাড়িয়ে সমতলেও
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ২০২১-এর ভোটে যদি বিমল গুরুংয়ের সমর্থন পেয়ে যান মমতা, তাহলে উত্তরের ভোটে আধিপত্য তৃণমূলের হাতেই থাকবে। তৃণমূল বিশেষ প্রভাব ফেলতে সমর্থ হবে। শুধু পাহাড় নয়, সমতলের জেলাগুলিতেও প্রভাব খাটাতে পারবে তৃণমূল কংগ্রেস। আর গুরুং তো ইতিমধ্যেই সমর্ত বার্তা দিয়ে রেখেছে। আবার তিনি এমন কথাও জানিয়েছেন ২০২১-এর লোকসভা নির্বাচনে যে দল গোর্খাল্যান্ডের দাবি মেনে কাজ করবে, তাঁর দিকেই সমর্থন থাকবে।

সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া
আডি/ ২৩ অক্টোবর

Back to top button