দুর্দান্ত একটি বছর পার করেছেন অ্যাঞ্জেলিক কার্বার। জার্মান এ তরুণী বছরটা শুরু করেছিলেন সেরেনা উইলিয়ামসকে হারিয়ে অসি ওপেন জিতে। বছরের শেষ গ্র্যান্ডস্লাম ইউএস ওপেনও জিতেছেন কার্বার। বছরের চারটি গ্র্যান্ডস্লামের তিনটির ফাইনালে উঠে দুটির শিরোপা জয়। উইম্বলডনে হেরে গিয়েছিলেন সেরেনার কাছে। বছরজুড়ে দুর্দান্ত এ পারফরম্যান্সের স্বীকৃতিও পেয়েছেন কার্বার। ইউএস ওপেনের ফাইনালে উঠেই সেরেনাকে হটিয়ে র্যাংকিংয়ের শীর্ষস্থানটির দখল নিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। টানা ১৮৬ সপ্তাহ শীর্ষে ছিলেন সেরেনা। শিরোপা জিতে এ অর্জন উদযাপন করেছেন কার্বার।
চেক প্রজাতন্ত্রের ক্যারোলিনা প্লিসকোভাকে ৬-৩, ৪-৬, ৬-৪ গেমে হারিয়ে ইউএস ওপেন জেতেন জার্মান এ সুন্দরী। জার্মান মেয়েদের মধ্যে সর্বশেষ ইউএস ওপেন জিতেছিলেন ১৯৯৬ সালে স্টেফিগ্রাফ। কুড়ি বছর পর ফ্ল্যাশিং মিডোসে জার্মান পতাকা ওড়ালেন ২৮ বছর বয়সী কার্বার। টেনিস ছাড়ার পর আন্দ্রে আগাসিকে বিয়ে স্টেফি এখন আমেরিকাতেই স্থায়ী হয়েছেন। তবে কার্বারের বিজয়টা তিনি গ্যালারিতে থেকে উপভোগ করতে পারেননি। তবে তার শিরোপা জয়ের সঙ্গে সঙ্গেই মোবাইলে বার্তা পাঠিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন। কার্বারও কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি, 'ছেটোবেলা থেকেই তিনি আমার আর্দশ।
এ কথা আমি তাকে অনেকবার বলেছি। আর আমার পক্ষে স্টেফি হওয়া সম্ভব নয়।' একই বছরে দুটি গ্র্যান্ডস্লাম, সঙ্গে র্যাংকিংয়ের শীর্ষস্থান। আর ইউএস ওপেন জয়ের পর হাতে এসেছে ৩৫ লাখ ডলারের প্রাইজমানির চেক। স্বভাবতই ভীষণ উচ্ছ্বসিত কার্বার, 'এটা চমকপ্রদ ব্যাপার। এটা আমার ক্যারিয়ারের সেরা বছর। আসলেই অবিশ্বাস্য লাগছে। আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন স্বপ্ন ছিল এক নম্বর খেলোয়াড় হবো, গ্র্যান্ডস্লাম জিতব। আজ আমি আমার দ্বিতীয় গ্র্যান্ডস্লাম শিরোপা হাতে এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং আগামীকাল (সোমবার) আমি র্যাংকিংয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আমি এক নম্বর হবো। আমার সব স্বপ্ন সত্যি হয়ে গেল!'
র্যাংকিংয়ে শীর্ষস্থান দখলেও একটি রেকর্ড করেছেন কার্বার। এখন তার বয়স ২৮। নারী টেনিসের র্যাংকিংয়ে সবচেয়ে বেশি বয়সে এক নম্বর হওয়া খেলোয়াড় হলেন তিনি।
তবে কার্বারের ভাগ্যটা সুপ্রসন্নই বলতে হবে। সেরেনাকে বিদায় করে ফাইনালে আসা প্লিসকোভা বেশ দাপটের সঙ্গেই লড়াই করেছিলেন। চেক এ তরুণী ৪০টি উইনার মেরেছেন। কিন্তু ৪৭টি আনফোর্ডস অ্যাররের জন্য ম্যাচটি ফসকে যায় তার হাত থেকে। তার অধিকাংশ ভুলই হয়েছে ম্যাচের অতি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে। এর পরও শেষ সেটে কার্বারের পয়েন্ট ব্রেক করে এগিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেটা ধরে রাখতে পারেনি নিজের ভুলে। এমন সব ভুল করেছেন যে, অনেক দিন তাকে মনোবেদনায় পুড়তে হবে। একটি উদাহরণ দিলেই বিষয়টা পরিষ্কার বোঝা যাবে, বেশ কয়েকবার তার ডজে বিভ্রান্ত হয়ে হাল ছেড়ে দিয়ে কার্বার দাঁড়িয়ে পড়ার পর সবাইকে অবাক করে দিয়ে বল নেটে মেরে নিশ্চিত পয়েন্ট হাতছাড়া করেছেন প্লিসকোভা।
আর বেস লাইনে মারতে গিয়ে তার অসংখ্য শট আউট হয়েছে। তার বেস লাইনের শটগুলো ফেরাতে গিয়ে অনেকবারই অসহায় মনে হয়েছে কার্বারকে। সম্ভবত অভিজ্ঞতার অভাবেই এ ধরনের ভুল করেছেন প্লিসকোভা। আর অভিজ্ঞতার জোরেই এ লড়াই জিতে যান কার্বার। এর আগে ১৭টি গ্র্যান্ডস্লামে অংশ নিয়ে তৃতীয় রাউন্ড পার হতে পারেননি চেক এ তরুণী। প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠেছিলেন এবার। কিন্তু সমাপ্তিটা ঠিকঠাক করতে পারেননি। শিরোপা হাতছাড়া হওয়ায় স্বভাবতই বেশ হতাশ প্লিসকোভা। তবে কার্বারের কাছে পরাজয়টা মেনে নিয়েছেন তিনি, 'সে আজ প্রমাণ করেছে, আসলেই সে এক নম্বর। আমি জানতাম, কাজটা অনেক কঠিন হবে। তবে দ্বিতীয় সেটে বেশ ভালো লড়াই করেছি।'
আর/১২:১৪/১৬ সেপ্টেম্বর