ব্রাসিলিয়া, ২১ আগষ্ট- বিশ্বকাপে ব্রাজিলের পাঁচ-পাঁচটি শিরোপা। অথচ অলিম্পিক ফুটবলে স্বর্ণ জিততে পারেনি কখনও। অধরা স্বপ্নপূরণে আরেকটি জয় প্রয়োজন ছিল সেলেকাওদের। মারকানা স্টেডিয়ামে তাদের সামনে প্রতিপক্ষ জার্মানি। একদিকে গত বিশ্বকাপে ৭-১ গোলের লজ্জাজনক হারের বদলা। অন্যদিকে প্রথমবারের মত অলিম্পিকে সোনা জয়ের স্বপ্ন। সব মিলিয়ে ব্রাজিলের জন্য এটা ছিল অনেক জবাবের ম্যাচ।
অবশেষে সব প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে পেনাল্টি শুট-আউটে জার্মানিকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো অলিম্পিক ফুটবলের স্বর্ণ জিতেছে ব্রাজিল। পেলে-জিকো-রোনালদো-রোনালদিনহোরা যা পারেননি সেটাই করেছেন নেইমার-জিসাসরা-উইভারটনরা।
খেলার ২৭ মিনিটে নেইমারের দুর্ধর্ষ গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। বক্সের বাইরে দুর্দান্ত একটা ফ্রি-কিকে গোল করেন নেইমার। তার ফ্রি-কিকটি গোলবারে লেগে আশ্রয় নেয় জালে। দ্বিতীয়ার্ধে গোল শোধ করে জার্মানি। ১-১ গোলে সমতা বিরাজ করলে ম্যাচ গড়ায় অতরিক্তি সময়ে।
তাতেও কোও দল গোল করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টি শুট-আউটে। প্রথম চারটি পেনাল্টি শুটে গোল করে উভয় দল। জার্মানির নিলস পেটারসেনের নেওয়া পঞ্চম পেনাল্টি শটটি ঠেকিয়ে দেন ব্রাজিল গোলরক্ষক উইভারটন। ব্রাজিলের হয়ে পঞ্চম পেনাল্টি কিক নেন অধিনায়ক নেইমার। গোল করতে কোনও ভুল করেননি তিনি। তার গোলে অলিম্পিক স্বর্ণ নিশ্চিত হয় ব্রাজিলের।
টুর্নামেন্টে নেইমারদের সূচনাটা ভালো ছিল না মোটেও। ইরাক ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ড্র করার পর ছন্দে ফেরে ব্রাজিল। গ্রুপের শেষ খেলায় ডেনমার্ককে ৪-০, কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়াকে ২-০ ও সেমিফাইনালে হন্ডুরাসকে ৬-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠে ব্রাজিল। ফাইনালে জার্মানিকে ৫ (১)-১ (১)হারিয়ে ব্রাজিলকে অধরা স্বর্ণ এনে দিলেন নেইমার-জেসাসরা।
ম্যাচের শুরুর ১০ মিনিটে গোলের খাতা খুলতে চেষ্টা করেছিল জার্মানরা। স্বাগতিকদের ডি-বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট নেন বার্নাডট। কিন্তু গোলবারে লেগে বল ফিরে এলে লিড নেওয়া হয়নি জার্মানির।
২২ মিনিটের মাথায় নেইমারের নেওয়া কর্নার থেকে ফাঁকায় দাঁড়ানো রেনাতো বল পেলেও তার শটটি গোলবারের পাশ দিয়ে চলে যায়। ২৫ মিনিটের মাথায় আরেকটি আক্রমণে যাওয়ার সময় নেইমারকে ফাউল করায় ডি-বক্সের কিছুটা বাইরে থেকে ফ্রি-কিক পায় রজারিও মিকেলের শিষ্যরা। ৩০ গজ দূর থেকে ফ্রি-কিক নেন বার্সার তারকা নেইমার। তার ডানপায়ের দুর্দান্ত কোনাকুনি শট জার্মানির জালে জড়ালে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল।
৩০ মিনিটের মাথায় সমতায় ফেরার সুযোগ পেয়েছিল জার্মানি। কিন্তু সে যাত্রায় ব্রাজিলকে বাঁচিয়ে দেন গোলরক্ষক উইভারটন। ৩৪ মিনিটে আরেকবার সুযোগ আসে জার্মানির। স্পট কিক থেকে উড়ে আসা বলে হেড করেন বেন্ডার। ব্রাজিলের পোস্টে লেগে বল বাইরে চলে যায়।
বিরতির পর খেলার ৫৯ মিনিটে সমতায় ফেরে ব্রাজিল। জেরমো তোজানের এসিস্ট থেকে গোলটি করেন ম্যাক্স মেয়ার। নির্ধারিত সময়ে আর কোনও গোল না হলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। অতিরিক্ত সময়েও কোন গোল না পেনাল্ট শুট-আউটে ম্যাচের নিস্পত্তি হয়। তাতে কপাল পুড়ে জার্মানির।
এফ/০৮:৪৫/২১আগষ্ট