ঢাকা, ১৮ আগষ্ট- সবার অলক্ষ্যে, গোয়েন্দাদের চোখ এড়িয়ে দেশের ৬৩ জেলার ৫০০ স্থানে একযোগে বোমা ফাটিয়ে, নিজেদের শক্তির প্রমাণ দিয়েছিলো জামায়াতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ বা জেএমবি। ২০০৫ সালের সেই ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়া তৎকালীন ক্ষমতাসীন সরকার, ছয়মাসের মধ্যে গ্রেপ্তার করে শায়খ আব্দুর রহমান ও সিদ্দিকুর রহমান বাংলা ভাইসহ জেএমবির শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের। দুবছরের মাথায় ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হয় তাদের ৬ জনকে। গ্রেপ্তার হয় হাজারের মতো নেতা-কর্মী। তাতেও থেমে থাকেনি তাদের কার্যক্রম। গেল ১১ বছরে পাঁচ দফা নেতৃত্ব পাল্টে সংগঠিত হয়েছে ভেতরে ভেতরে।
আইনশৃংখলা বাহিনী বলছে, সাম্প্রতিক সব হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছে এ সগংঠনটিই। কানাডা প্রবাসী তামিম চৌধুরীর নেতৃত্বে নব্য জেএমবির নামে কাজ করছে স্বসস্ত্র এ গ্রুপটি। তবে মূলধারার মতো নব্য জেএমবিও খুব বেশি সুবিধা করতে পারবে না, এমন হুঁশিয়ারি কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের।
গেল ১১ বছরে কেবল র্যাবের হাতেই ধরা পড়ে হাজারের মতো জেএমবি সদস্য। কিন্তু গত এক-দুই বছরে আবারও মাথা চাড়া দিতে শুরু তারা। পয়লা জুলাই গুলশানে হলি আর্টিসানে হামলার পর, আইন শৃংখলা বাহিনী জানায়, নব্য জেএমবি নামের একটি শাখা চালিয়েছে এ হামলা। ২৬ জুলাই কল্যাণপুরে অপারেশন স্টোর্ম 26 এ নিহত ৯ জনও এ দলেরই সদস্য।
শীর্ষ দুই নেতাসহ ছয়জনের ফাঁসির পর ২০১০ সালে ২৫ মে রাজধানীর দনিয়া থেকে গ্রেপ্তার হবার আগ পর্যন্ত জেএমবির নেতৃত্বে দেন মাওলানা সাইদুর রহমান। জেলে বসেও চলছিল তার কর্মকাণ্ড। ২০১৫ সালের ২৭ শে জুলাই ঢাকায় গ্রেপ্তার হয়, সাইদুরের ছেলে আবু তালহা। এরই মাঝে তারই আঁকা ছকে ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের ত্রিশালে পুলিশ হত্যা করে, ছিনতাই করা হয় তিন জেএমবি সদস্যকে। তাদের একজন সালাউদ্দিন এখন জেএমবির মূলধারার নেতা।
তবে গোয়েন্দা তথ্য বলছে, সাম্প্রতিক স্বশস্ত্র হামলার নেতৃত্ব দিচ্ছেন আলোচিত নব্য জেএমবির নেতা কানাডা প্রবাসী তামিম চৌধুরী। এছাড়াও নব্য জেএমবির রাজীব ও রিপন নামের দুই সংগঠককে খুঁজছে গোয়েন্দারা।
সবশেষ সোমবারও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪ নারী জেএমবি সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। আর মঙ্গলবার তামিম চৌধুরী, মারজানসহ আরো ৭/৮ জন নব্য জেএমবি সংগঠককে শনাক্ত করার দাবি জানায় পুলিশ।
১৯৯৮ সালে শায়খ আব্দুর রহমানের হাতে প্রতিষ্ঠিত নিষিদ্ধ জেএমবি এখন তিনভাগ। তাই কে কখন নেতৃত্ব আসছে, সব সময় তা জানা সম্ভব হচ্ছে না বলে স্বীকার করেছে গোয়েন্দা সূত্রগুলো।
এফ/০৯:২০/১৮আগষ্ট