মাগুরা, ০৪ আগষ্ট- জেলার মহম্মদপুর উপজেলার খালিয়া গ্রামে আশি বছরের পৌঢ়ের চেহারা নিয়ে অস্বাভাবিক শারীরিক অবস্থা নিয়ে বেড়ে উঠা চার বছর বয়সী শিশু বায়োজিদকে চিকিৎসার জন্য শুক্রবার ঢাকায় নিয়ে আসছেন তার বাবা-মা।
শনিবার সকালে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। এ জন্য মাগুরা সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগ থেকে বুধবার বিকেলে তাকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।
মাগুরা সদর হাসপাতালের মেডিসিন কনসালটেন্ট ডা. দেবাশিষ বিশ্বাস জানান, প্রজেরিয়া রোগে আক্রান্ত বায়োজিদকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিতে তার-বাবা মা তার কাছে আসেন। তিনি তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তির জন্য ছাড়পত্র দিয়েছেন। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসকদের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। শনিবার সকালে তারা তাকে সেখানে ভর্তি করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বায়োজিদের বাবা লাবলু শিকদার জানান, ৪ বছর আগে ৭০-৮০ বছরের বৃদ্ধের মতো চেহারা নিয়েই জন্ম নেয় শিশু বায়োজিদ। দিন দিন তার শরীরে বার্ধক্যের ছাপ আরও প্রকট আকার ধারণ করে।
জন্মের পর বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করিয়ে কোনো ফল পাননি তারা। ডাক্তাররা তার রোগই সনাক্ত করতে পারেনি। কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে তাকে ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারেননি। মাগুরা সদর হাসপাতালে গঠিত ৫ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড বিরল প্রোজেরিয়া রোগে আক্রান্ত বায়োজিদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন। সে মোতাবেক তিনি শুক্রবার রাতে তাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন।
এ বিষয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহেল কাফি জানান, এ ধরনের শিশু সারা পৃথিবীতেই দুর্লভ। এ রোগকে বলা হয় হাচিনসন গিলফোর্ড প্রোজেরিয়া সিনড্রম। ১৮৮৬ সালে প্রথম হাচিনসন এ ধরনের রোগীকে আবিষ্কার করেন। সারা পৃথিবীতে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ একশ রোগী সনাক্ত করা গেছে। কয়েক বছর আগে বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গে প্রথম প্রোজেরিয়া রোগীর সন্ধান মেলে। বায়োজিদই বাংলাদেশের দ্বিতীয় রোগী।
তিনি আরো জানান, বংশগত বা জিনগত কারণে এটি হয়ে থাকে। বায়োজিদের বাবা-মা নিকটাত্মীয় হওয়ায় এ রোগ হতে পারে। সাধারণত এ ধরনের শিশুদের গড় আয়ু ১৩ বছর। এখন পর্যন্ত এর কোনো ফলপ্রসূ চিকিৎসা বের হয়নি।
শিশুটির মা-বাবা জানান, এলাকাবাসী তাদের বিকৃত চেহারার সন্তানটিকে নিয়ে নানা ধরনের খারাপ কথা বলে। অনেকে নানা কুসংস্কার রটিয়ে থাকে। সবার কাছে তাদের ছেলের সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা করেছেন।
আর/১৭:১৪/০৪ আগষ্ট