ঢাকা, ২৬ জুন- জনপ্রিয় গায়ক ও সংগীত পরিচালক ইবরার টিপুর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে রমনা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন তার স্ত্রী ফারজানা ববি (মিথিলা)।
তিনি জানান, সোমবার তিনি টিপুকে বিচ্ছেদের নোটিশ পাঠাবেন।
নির্যাতনের অভিযোগ এনে শনিবার ফারজানা সাধারণ ডায়েরিটি করেন, যার নম্বর ১৯১১।
মিথিলার ভাষায়, দীর্ঘদিন ধরেই তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন টিপু। অনেকটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন তিনি। ছেলে ওহী ইবরারের কথা মাথায় রেখে শুরুর দিকে এ বিষয়টি মুখ বুজে সহ্য করে গেছেন মিথিলা। কিন্তু সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইবরার টিপু বিভিন্ন নারী কণ্ঠশিল্পীসহ অনেকের সঙ্গে পরকীয়ায় গভীরভাবে জড়িয়ে পড়েন বলে জানান তিনি।
সম্প্রতি বিন্দু কনা নামের এক গায়িকার সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই নিয়ে মিথিলার সঙ্গে ইবরার টিপুর বেশ কয়েকবার তর্ক-বিতর্ক ও ঝগড়াও হয়েছে। পরকীয়ার বাইরেও বিভিন্ন সময় মিথিলাকে শারীরিক নির্যাতনও করেছেন ইবরার টিপু। আর মানসিক নির্যাতন তো রয়েছেই। জিডিতে পুরো বিষয়টিই তুলে ধরেছেন মিথিলা।
এর আগেও দু-একজন জনপ্রিয় নারী শিল্পী ইবরার টিপুর আচরণের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন সংগীত সংশ্লিষ্ট অনেকের কাছে। মিথিলা বলেন, “বিয়ের পর থেকেই তার পরকীয়া আমি একের পর এক দেখেছি। কিন্তু এখন আমার ছেলে ওহীর বয়স ৮। ওর জন্য সব সহ্য করে গেছি। ভেবেছি ছেলের মধ্যে এর প্রভাব পড়বে। কিন্তু ইবরার থামেনি। একের পর এক মেয়ের সঙ্গে ওর সম্পর্ক চলেছে। এখনো চলছে। এসবে বাধা দিতে গেলে ও আমাকে ডিভোর্সের হুমকি দেয়। মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে। রোববার সকালেই আমি জিডি করেছি ইবরারের বিরুদ্ধে। সেখানে সবকিছু উল্লেখ করেছি।”
তিনি বলেন, “সম্প্রতি বিন্দু কনা নামের এক শিল্পীর সঙ্গে ওর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। সেটায় বাধা দিতে গেলে যাচ্ছেতাই ব্যবহার সে করছে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি ডিভোর্সের।”
মিথিলা বলেন, “গত ১২ বছরে আমি তাকে সব বিষয়ে সহযোগিতা করেছি। আগে সে শুধু বাজাতো। আমি তাকে বলে গান গাওয়ানো শুরু করি। কিন্তু এত বছরের ফলাফল শূন্য। সবার সামনে সে আমার সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করে। মুখোশ পরে থাকে। কিন্তু আমি চাই সে মুখোশ উন্মোচিত হোক। আর কোনো মেয়ের জীবন যেন নষ্ট না হয় সেটাই চাই। যেকোনো মেয়ে দেখলেই সে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। কোনো কিছুর কেয়ার করে না। এর আগেও কয়েকজন নারী শিল্পীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে সে। সেটা সংগীতসংশ্লিষ্ট অনেকেই জানেন। মুখ বুজে এতদিন সব মেনে নিলেও আমি আর সইতে পারছি না। সে এখন নিয়ন্ত্রণহীন গাড়ির মতো। তাকে কোনোভাবেই আটকানো সম্ভব না। আর তার কাছে আমার ও ওহীর কোনো নিরাপত্তাও নেই। এভাবে তার সঙ্গে থাকতে গেলে দেখা যাবে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। তাই জিডি করে রাখলাম।”
ইবরার টিপু অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। রোববার দুপুরে তিনি জানান, “আমি এখন ফারজানার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার আগে কিছু বলতে চাচ্ছি না।”
২০০৪ সালে ইবরার টিপু ও ফারজানা ববি বিয়ে করেছিলেন।
আর/১০:১৪/২৬ জুন