ঢাকা, ২১ জুন- মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীর আপিলের রায় পুনর্বিবেচনা করতে (রিভিউ) আবেদনের ওপর শুনানীর দিন নির্ধারণ করা হবে আগামী ২৫ জুলাই। এদিন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্নাঙ্গ বেঞ্চ থেকে সিদ্ধান্ত আসতে পারে কবে নাগাদ মীর কাসেমের রিভিউ আবেদনের ওপর শুনানী করা হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানী করে এ আদেশ দেন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। মীর কাসেমের আপিল দ্রুত শুনানী করতে আজ মঙ্গলবার চেম্বার আদালতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
এর আগে গত ১৯ জুন (রোববার) আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় মীর কাসেমের আইনজীবীরা এই আবেদন জমা দেন। ৮৬ পৃষ্ঠার আবেদনে ১৪টি যুক্তি দেখিয়ে তারা মীর কাসেমকে মৃত্যুদণ্ড থেকে অব্যাহতি চেয়ে রিভিউ আবেদনটি দাখিল করেছেন।
গত ৮ মার্চ প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ ট্রাইব্যুনালে মীর কাশম আলীকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। তবে ট্রাইব্যুনাল দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দিলেও আপিল বিভাগ একটি অভিযোগে এই দণ্ড বহাল রাখেন।
তার বিরুদ্ধে আনীত ১৪টি অভিযোগের মধ্যে মীর কাসেমের আপিল আংশিক মঞ্জুর করে ৪, ৬ ও ১২ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আর ২, ৩, ৭, ৯, ১০, ১১ ও ১৪ নম্বর অভিযোগে আপিল নাকচ করে ট্রাইব্যুনালের রায়ই বহাল রাখা হয়েছে।
এর মধ্যে ১২ নম্বর অভিযোগে হত্যার দায় থেকে এই জামায়াত নেতা অব্যাহতি পেলেও ১১ নম্বর অভিযোগ সর্বোচ্চ সাজাই বহাল রাখা হয়েছে।
গত ৬ জুন মীর কাসেমের আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি এখন ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। পরে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করবে ট্রাইব্যুনাল। সেই মৃত্যু পরোয়ানা মীর কাসেম আলীকে পড়ে শোনায় কারা কর্তৃপক্ষ। আইন অনুযায়ী ১৫ দিনের মধ্যে রায় পুনর্বিবেচনার(রিভিউ)আবেদন করার সুযোগ ছিল তার। সেই নির্ধারিত সময় পার হওয়ার একদিন আগে সেই আবেদন করা হয়।
রিভিউতে তার আবেদন খারিজ হলে আর কোনো আইনী প্রতিকার তার থাকবে না। সেক্ষেত্রে দোষ স্বীকার করে নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন তিনি করতে পারবেন। সেই আবেদন গৃহীত না হলে সরকারের নির্বাহী আদেশে কারা কর্তৃপক্ষ দণ্ড কার্যকর করবেন।
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ১৭ জুন মতিঝিলে নয়া দিগন্ত কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার করা হয় দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ও এই ব্যবসায়ীকে। পরের বছর ৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তার যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হয়। ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের রায়ে মীর কাশেম আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
মীর কাসেম আলী ষষ্ঠ ব্যক্তি যিনি মানবতাবিরোধী অপরাধে চূড়ান্তভাবে মৃত্যুদণ্ড পেয়েছেন। এর আগে জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লা এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
এ আর/১৫:২০/ ২১জুন