ঢাকা, ১১ মে- মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরু থেকেই জামায়াত বলার চেষ্টা করেছিল সরকার তাদের নেতাদের কিছুই করতে পারবে না। রাজনৈতিক ও আইনগতভাবে এই বিচারের মোকাবেলার ঘোষণা দিয়েছিল স্বাধীনতাবিরোধী দল। এই লক্ষ্যে নজিরবিজীন সহিংসতাও শুরু করে তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনও ফল হয়নি। দলের দুই সহকারী সেক্রেটারি এবং সেক্রেটারি জেনারেলের পর এবার ফাঁসি কার্যকর হলো আমির মতিউর রহমান নিজামীরও।
২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রথম দণ্ড কার্যকর হয় জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার। সে সময় এই দণ্ড কার্যকরের প্রতিবাদে জামায়াত ব্যাপক সহিংসতা চালালেও ধীরে ধীরে নেতা-কর্মীরা স্থিমিত হয়ে আসে। আর এর পর পর্যায়ক্রমে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের দণ্ড কার্যকরের পর তেমন কোনও প্রতিক্রিয়া দেখায়নি জামায়াত। এবার নিজামীর দণ্ড কার্যকরের পরও অনেকটাই নিশ্চুপ স্বাধীনতাবিরোধী দলটি।
নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের প্রতিবাদে তিন দিনের কর্মসূচি দিলেও সকাল থেকে দলের নেতা-কর্মীদের প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। দলের কেন্দ্রীয় নেতারা আত্মগোপনে, চুপসে গেছেন মাঝারি থেকে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও।
এ বিষয়ে জানতে জামায়াতের একাধিক নেতার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি। তাদের কেউ ফোন ধরেননি, আর বেশিরভাগই বন্ধ। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘জামায়াত মুক্তিযুদ্ধকে সবসময়ই অস্বীকার করে। তারা দেশ স্বাধীনের পরও আস্ফালন করেছে। তারা যে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে এরপরও এদেশের কিছু দোসরদের সহযোগিতায় বার বার আস্ফালন করে লাল-সবুজের পতাকাও গাড়িতে লাগিয়েছে। এর সমুচিত জবাব পেয়েছে তারা। তাদের শেষ আস্ফালনও আর নেই। মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মা আজ শান্তি পাচ্ছে’।
শিক্ষাবিদ ড. আনিসুজ্জামান বলেন, ‘জামায়াতের আস্ফালন ব্যর্থ হয়েছে। এদেশের মানুষ জামায়াত নেতাদের দম্বের পতন দেখেছে’।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নূহ উল আলম লেনিন বলেন, ‘নিজামীর ফাঁসির মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে যে, অপরাধী যতো বড় শক্তিশালীই হউক তাদের বিচার হবেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দৃঢ় নেতৃত্বের কারণেই নিজামীদের বিচার করেছেন। জাতি কলঙ্কমুক্তের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছে’।