সিলেট, ০৫ এপ্রিল- বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের প্রধান বৃক্ষ সুন্দরীর সংখ্যা ও উপযোগী আবাসস্থল দ্রুতই সংকুচিত হয়ে আসছে। সুন্দরীর পাশাপাশি পশুর বৃক্ষও এখন বিপন্নপ্রায়। সুন্দরবনের যে স্থানে সুন্দরী, পশুর ও কাঁকড়াগাছের আবাসস্থল ছিল, সে স্থান এখন অতিমাত্রায় লবণসহিষ্ণু গরান ও গেওয়াগাছের আবাসস্থলে পরিণত হচ্ছে, যা বনের জীববৈচিত্র্য ও প্রাণিকুলের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক স্বপন কুমার সরকারের নেতৃত্বে একদল গবেষকের তিন বছরব্যাপী গবেষণায় এ তথ্য ও পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে।
গবেষক দলের নেতৃত্বদানকারী ওই শিক্ষক ২০১৩ সাল থেকে যুক্তরাজ্যের গ্লাসগো ইউনিভার্সিটিতে সুন্দরবনের বিপন্নপ্রায় উদ্ভিদকুল নিয়ে গবেষণা করছেন। ২০১৪ সালে বছরব্যাপী তাঁর নেতৃত্বে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল তরুণ গবেষক সুন্দরবনের ১২০টি স্থান থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য ও নমুনা সংগ্রহ করেন। পরে সেসব নমুনা নিয়ে চলে গবেষণা।
সুন্দরবন নিয়ে স্বপন কুমারের একটি গবেষণাপত্র বিখ্যাত সায়েন্টিফিক রিপোর্টস সাময়িকীর ফেব্রুয়ারি সংখ্যায় ‘আমরা কি বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের বিপন্নপ্রায় উদ্ভিদকুলকে রক্ষায় ব্যর্থ হচ্ছি?’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে। এ গবেষণাপত্রে তাঁর সঙ্গে আরও চারজন সহলেখক আছেন।
গবেষকেরা তাঁদের উপস্থাপিত গবেষণাপত্রে বন্য প্রাণীর অভয়ারণ্যগুলোকে রক্ষা ও টেকসই ব্যবস্থাপনার জন্য দ্রুত পর্যাপ্ত দক্ষ লোকবল এবং প্রযুক্তিসম্পন্ন আলাদা সংরক্ষিত এলাকা স্থাপনের সুপারিশ করেছেন।
স্বপন কুমার সরকার দাবি করেন, শুকনো মৌসুমে সুন্দরবনের নদ-নদীগুলোতে মিঠাপানির প্রবাহ অব্যাহতভাবে কমতে থাকলে, লবণাক্ততা বাড়তে থাকলে এবং কাঠ শিকার বন্ধ করা না গেলে ভারত ও মিয়ানমারের মতো বাংলাদেশেও আগামী কয়েক দশকের মধ্যে সুন্দরীগাছ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। একই ঘটনা ঘটবে পশুর বৃক্ষের ক্ষেত্রেও।
এস/১৭:৫৫/০৫ এপ্রিল