ঢাকা, ০১ এপ্রিল- বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামী একটি সন্ত্রাসী সংগঠন- যুক্তরাষ্ট্র অবশেষে তা বুঝতে পেরেছে বলে ঢাকা সফররত দেশটির একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর বলেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
বৃহস্পতিবার ওই বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “জামায়াত সন্ত্রাসী সংগঠন আগে এটা বুঝতে তারা সময় নিয়েছিল। কিন্তু এখন তারা এটা অনুধাবন করতে পেরেছে।” ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্র স্টেট ডিপার্টমেন্টের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি সারাহ সেওয়াল এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি অ্যালান বেরসিনের নেতৃত্বে ওই প্রতিনিধি দল দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে।
প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম অতিথিদের সম্মানে মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করেন। পরে বিকালে বৈঠকের বিষয়ে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। প্রতিনিধি দলের এ ধরনের সফর যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক ‘পরিণত পর্যায়ে’ পৌঁছেছে নির্দেশ করে বলে মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী।
সন্ত্রাস মোকাবেলা ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপে প্রতিনিধি দল সন্তোষ প্রকাশ করেছে জানিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, বিশেষভাবে জঙ্গিবাদ মোকাবেলার আলাদা সেল গঠনের বিষয়টি তারা প্রশংসা করেছেন।
জঙ্গিবাদ মোকাবেলার এই সেলে সহযোগিতা করার আগ্রহও তারা প্রকাশ করেছেন। সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্র যেন বিভ্রান্ত না হয় সেজন্য বাংলাদেশের রাজনীতিক দলগুলোর সম্পর্কেও প্রতিনিধি দলকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য।
প্রতিমন্ত্রী প্রতিনিধি দলকে জানান, বাংলাদেশে ‘শুধু’ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সংগঠন যেমন রয়েছে- তেমনি কিছু রাজনীতিক দল রয়েছে যারা ছদ্মাবরণে একই কাজ করে থাকে। “এই দুই পক্ষের মধ্যে খুব সামান্যই পার্থক্য রয়েছে। তাই আমি তাদের (প্রতিনিধি দলকে) বলেছি, এসব পক্ষের (রাজনীতির ছদ্মাবরণে জঙ্গি কার্যক্রমে যুক্ত দল) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে সরকার রাজনীতির ক্ষেত্র সংকুচিত করছে বলে তাদের ভাবা উচিত নয়।”
বৈঠকে রাজনৈতিক চাপের কারণে সহিংস চরমপন্থার উত্থান হবে বলে সাম্প্রতিক ধারণাও প্রত্যাখ্যান করেন প্রতিমন্ত্রী। বক্তব্যের সমর্থনে তিনি বলেন, “জামায়াত এখানে তার জন্মের শুরু থেকেই সহিংস চরমপন্থায় যুক্ত রয়েছে। আর আমাদের সরকার ক্ষমতায় এসেছে ২০০৯ সালে।”
সফররত প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করে। বাংলাদেশ বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় ‘গুরুত্ব দেওয়ায়’ বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি অ্যালান বেরসিন সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন বলেও জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে প্রতিনিধি দল বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা, মানবাধিকার, সহিংস চরমপন্থা মোকাবিলা ও আইনের প্রয়োগসহ সহযোগিতামূলক বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করে।
এফ/১৬:২২/০১ এপ্রিল