ঢাকা, ১১ মার্চ- প্রথমবারের মতো দলীয়ভাবে অনুষ্ঠেয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ঘিরে হিন্দুদের উপর হামলার আশঙ্কা জানিয়ে তাদের নিরাপত্তায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট।
সংগঠনের মুখপাত্র পলাশ কান্তি দে শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের শঙ্কার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “সামনে দলীয় প্রতীকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। অতীতের মতোই এবারও হিন্দু সম্প্রদায়ের মঠ, মন্দির, ঘরবাড়ি, প্রতীমা ভাংচুর এবং নারীর উপর অত্যাচার-নির্যাতন হতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।”
হিন্দুদের নির্বাচনকেন্দ্রীক অভিজ্ঞতা সুখকর নয় মন্তব্য করে পলাশ বলেন, “নির্বাচন এদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে নির্যাতন। নির্বাচন এলে নির্যাতন মহোৎসবে পরিণত হয়।”
নির্বাচনে কেউ হারবে কেউ জিতবে- এই সত্যকে মাথায় রেখে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে পলাশ বলেন, “নির্বাচনে হেরে গেলে হিন্দু সম্প্রদায়ের মঠ, মন্দির, ঘর-বাড়ি, প্রতীমা ভাংচুর ও নারীর উপর অত্যাচার-নির্যাতন করতে হবে- এটা মোটেই কাম্য নয়।”
সংখ্যালঘু নির্যাতন একটা নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, নির্বাচন এলে তা বহুগুণে বেড়ে যায়।
২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে-পরে দেশব্যাপী সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনাগুলো স্মরণ করিয়ে দেন হিন্দু মহাজোটের এই নেতা।
“এবার দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচন হচ্ছে, তাই আমরা আশঙ্কা করছি সেই সহিংসতার পুনরাবৃত্তি হতে পারে।”
“ভোট দেয়নি- এই অজুহাতে পরাজিত প্রার্থী আমাদের মঠ, মন্দির, ঘর-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করতে পারে। কারণ এদেশে যে কোনো রাজনীতির বলির পাঠা হয় হিন্দুরা।”
যুদ্ধাপরাধ মামলার রায়কে কেন্দ্র করেও হিন্দুদের উপর নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন হিন্দু মাহাজোটের মুখপাত্র।
ইউপি নির্বাচন কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্মাবলম্বী কয়েকজন চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ বিভিন্ন এলাকায় হিন্দ্রদের হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
পলাশ বলেন, “আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, সংখ্যালঘু হিন্দু ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যাওয়া-আসা, মঠ-মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, নারী-বাড়ি সুরক্ষা এবং প্রতীমা ভাংচুর না হয়ে সেদিকে লক্ষ্য রেখে নিরাপত্তা দেওয়ার।”
হিন্দুদের নিরাপত্তা দিতে সরকার ব্যর্থ হলে জাতীয় হিন্দু মহাজোট কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে হুঁশিয়ারি করেন তিনি।
বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের সভাপতি প্রভাস চন্দ্র রায়, মহাসচিব আনন্দ কুমার বিশ্বাস, প্রধান সমন্বয়কারী শ্যামল কুমার রায়, নির্বাহী সভাপতি সূকৃতী কুমার মণ্ডল ছাড়াও সংগঠনের অন্য নেতরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
আর/১১:২৫/১১ মার্চ