নয়াদিল্লি, ২৭ ফেব্রুয়ারী- অসহিষ্ণুতার প্রশ্নে তৃণমূল সাংসদ সুগত বসু এর আগে সংসদের ভিতরে তাত্ত্বিক মোড়কে সমালোচনা করেছিলেন মোদী সরকারের। আর আজ চাঁছাছোলা ভাষায় সাম্প্রদায়িকতা এবং জাতীয়বাদ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করলেন সুলতান আহমেদ। রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা নিয়ে বিতর্কে তাঁর সুর আজ এতটাই চড়ায় পৌঁছয় যে সরকারি বেঞ্চ থেকে দু-দু’বার প্রতিবাদ জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এবং দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী রাজীবপ্রতাপ রুডি। সুলতানকে সতর্ক করে দিয়ে রুডি বলেন, ‘‘ভুলে যাবেন না, আপনি দেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্কে কথা বলছেন!’’
নেত্রীর নির্দেশে জেএনইউ কাণ্ড নিয়ে এত দিন মুখ বন্ধ রেখেছিলেন তৃণমূল নেতারা। কিন্তু বিরোধীরা অভিযোগ করা শুরু করে— কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের সঙ্গে গোপন বোঝাপড়ার কারণেই তৃণমূলের মুখে কুলুপ। এই প্রচারের মোকাবিলা করতেই সংসদে সুগতকে দিয়ে তাত্ত্বিক মোড়কে সরকারকে বেঁধার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল। কিন্তু নিয়মরক্ষার সেই সমালোচনার জলদগম্ভীর ভাষা শেখর গুপ্তের মতো সাংবাদিককে আপ্লুত করলেও বাংলার সংখ্যালঘু আম ভোটারদের মনে তা কতটা দাগ কাটবে, তা নিয়ে সন্দিহান তৃণমূল নেতৃত্ব। নানা কারণে এক দিকে মোদী সরকারকে না-চটানোর কৌশল যেমন তাঁদের নিতে হচ্ছে, পাশাপাশি ভোটের মুখে রাজ্যে সংখ্যালঘুদের বার্তা দেওয়ার দায়ও রয়েছে তৃণমূলের। সংসদে মোদী-বিরোধিতার সুর তুঙ্গে তুলে সুলতান সেই কাজটিই করলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
জাঠ সংরক্ষণ থেকে দাদরি কাণ্ড— তাই আজ সব বিষয় নিয়েই রণংদেহি ছিলেন উলুবেড়িয়ার এই সাংসদ। সুলতানের কথায়, ‘‘দু’টি শক্তি কেন্দ্র ছিল ইউপিএ-র— সনিয়া এবং মনমোহন। এই সরকারেরও দু’টি মাথা। একটি মোদী এবং অপরটি নাগপুরে আরএসএস-এর সদর দফতর!’’ তাঁর কথায়, ‘‘আরএসএস আজ ঠিক করে দিচ্ছে ভারতবাসী কী খাবে, কী খাবে না!’’ তিনি বলেন, ‘‘সংসদের দেওয়ালে লেখা রয়েছে বসুধৈব কুটুম্বকম। আরএসএস ভাইরা কালো রঙ লেপে দিন এর উপরে!’’ সুলতানের দাবি, ‘‘সংখ্যালঘু মন জয়ে এই সরকার কিছুই করেনি। বরং নেতারা বলেছেন আরামে ঘুমোতে চাইলে পাকিস্তান যান!’’
সুলতানের মন্তব্যে সরকারি বেঞ্চে যথেষ্ট শোরগোল পড়ে যায়। রুডি বলেন, ‘‘এই সাংসদ প্রবল ঘৃণার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বলে চলেছেন। গোটা দেশ দেখছে!’’ পরে সংসদের কার্যাবলী থেকে বাদও দেওয়া হয় সুলতানের বক্তৃতার কিছু কিছু অংশ।