বগুড়া, ০৯ ফেব্রুয়ারী- বাঁশঝাড়ের মধ্যে গাছের ডালে বাঁধা ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা। ঘরের ভেতরে মনিটর বসিয়ে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হয় বাড়িতে কে আসছেন? বাইরে কী হচ্ছে? নিরাপদে মাদক ব্যবসা চালানো এবং পুলিশি গ্রেপ্তার এড়াতে বগুড়ার ধুনটের মাঠপাড়া গ্রামে এই আয়োজন করেছেন এক যুবক।
গতকাল ধুনটে মাদক সেবনের অভিযোগে দণ্ডপ্রাপ্ত এক ব্যক্তির স্বীকারোক্তির পর তাঁর বাড়িতে গিয়ে পুলিশ ওই আয়োজন দেখতে পায়। পরে বাসার ভেতর ও বাইরে থেকে তিনটি সিসি ক্যামেরা, একটি টিভি মনিটর এবং বিভিন্ন ইলেকট্রনিক সামগ্রী উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, মাদক সেবনের অভিযোগে স্থানীয় ইউসুফ আলী (২৫) ও তাঁর সহযোগী মনোয়ার হোসেনকে (২২) গত রোববার রাত ১০টার দিকে শেরপুর-ধুনট বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই রাতেই তাঁদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হয়। ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী হাকিম হাফিজুর রহমান দুজনকে এক বছর করে কারাদণ্ড দেন।
ধুনট থানার পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) পঞ্চনন্দ সরকার বলেন, রাতে আসামিদের থানা হেফাজতে রাখা হয়। গতকাল সোমবার সকালে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ইউসুফ স্বীকার করেন, তিনি মাদক ব্যবসা পরিচালনা করেন তাঁর বাসায়। পুলিশের গ্রেপ্তার এড়াতে নিজ বাড়ির প্রবেশপথের প্রধান রাস্তায় গাছের ডালে ৩০০ মিটার পরপর তিনটি সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছেন তিনি। পুলিশ তাঁর বাড়িতে অভিযানে আসার সময় তিনি ঘরের ভেতর থেকে ওই ক্যামেরার মাধ্যমে সবকিছুই দেখতে পান। পুলিশ উপস্থিত হওয়ার আগেই মাদকদ্রব্যসহ পালিয়ে যান। প্রায় এক মাস আগে সিসি ক্যামেরাগুলো লাগানো হয়েছে।
থানার এসআই আবদুল মোতালিব বলেন, এক সপ্তাহ আগে অভিযান চালানো হয়েছিল ইউসুফের বাসায়। তবে বাড়িতে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। মালামাল নিয়ে তিনি পালিয়ে যান। তিনি আরও বলেন, ইউসুফের বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ একাধিক মাদকের মামলা আছে। গতকাল বেলা তিনটার দিকে ইউসুফ ও মনোয়ারকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ইউসুফ গতকাল সকালে থানাহাজতে বলেন, ‘আমার বাড়িতে কে আসে, কে যায় সেটা দেখার জন্যই সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। কারও বাড়িতে সিসি ক্যামেরা লাগানো কি অপরাধ? আমার কাছে কোনো মাদক ছিল না। পুলিশ সন্দেহ করে আমাকে গ্রেপ্তার করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দিয়েছে।’