বেইজিং, ০৭ ফেব্রুয়ারী- এতোদিন ধরে সমাজতান্ত্রিক দেশ চীনের ক্ষমতাসীন দল কমিউনিস্ট পার্টিতে কর্মরত সদস্যদের ধর্ম পালনের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এখন থেকে দলের অবসরপ্রাপ্তদের জন্যও একই নিয়ম কার্যকর হবে।
শুক্রবার চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিনহুয়ার বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, কমিউনিস্ট পার্টির অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের ওপরও এখন থেকে কোনো ধর্মে বিশ্বাস কিংবা কোনো ধর্মের আচার-আচরণ পালনের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
চীন রাষ্ট্রীয়ভাবে একটি নাস্তিক দেশ। তবে সেখানে স্বাধীনভাবে ধর্ম পালনের নিশ্চয়তা আছে বলে বার বার দাবি করে আসছে দেশটি। কমিউনিস্ট পার্টিতে কর্মরত সদস্যদের ধর্ম পালনের অনুমতি দেয়া হয় না চীনে। নতুন এই নিয়মের ফলে অবসরপ্রাপ্ত সদস্যরাও আর ধর্ম মানতে পারবেন না। এমনকি সব ধরনের ধর্মীয় রীতি-নীতিরও বিরোধীতা করতে হবে তাদের।
কমিউনিস্ট পার্টির সবচেয়ে প্রভাবশালী বিভাগ ‘অর্গানাইজেশন ডিপার্টমেন্ট’ বা ‘সংগঠন বিভাগ’ থেকে এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। বিভাগের এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘স্পষ্ট নির্দেশনা হচ্ছে, দলের অবসরপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা কিংবা সদস্য কোনো ধর্মে বিশ্বাস করতে পারবেন না, কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না এবং তাদের সব ধরনের ধর্মীয় রীতি-নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।’ ওই কর্মকর্তা বলেন, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অবশ্যই তাদের চিন্তায়, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে এবং কাজে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে সর্বোচ্চ ঐক্য ধরে রাখতে হবে।
চীনের সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকলেও দেশটিতে ধর্মীয় কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সব ধরনের উপসনালয় রাষ্ট্র-অনুমোদিত হতে হয় এবং তাদের প্রভাব যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য উপাসনালয়গুলোর কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে নজদারি করে সরকার।
চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে মুসলিমদের ধর্মীয় জীবনের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আছে। এছাড়া বৌদ্ধদের আধ্যাত্মিক আন্দোলন ‘ফালুন গং’কে ‘শয়তানি রীতি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে ১৯৯৯ সাল থেকে নিষিদ্ধ করে রাখা হয়েছে দেশটিতে।