খালেদা জিয়া লন্ডনে বেশ কয়েকটি মাস কাটিয়ে গেলেন। যদিও চিকিৎসার নাম করে বিদেশে এসেছিলেন, কিন্তু বিদেশে তাঁর দীর্ঘ অবস্থান ছিল রহস্যাবৃত।
দলের নেতাকর্মীদেরও তিনি দেখা দেননি। একবার মাত্র একটি শপিং সেন্টারে তাঁকে পুত্র ও পুত্রবধূসহ দেখা যায়। তারপর থেকে তিনি প্রায় লাপাত্তা। দলের নেতাকর্মীরা নেত্রীর সাক্ষাৎ না পেয়ে ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু লন্ডনে খালেদা জিয়ার অবস্থান ছিল প্রায় রহস্য কাহিনির নায়িকার মতো। এমনকি তাঁর সে ‘ইতিহাসবিদ’ পুত্র তারেক রহমান, যিনি প্রায়ই নতুন নতুন ইতিহাস আবিষ্কার করে অভিজাত হোটেলে সভা ডেকে তা ভক্তবৃন্দকে শোনাতেন, তাঁকেও গত কয়েক মাস নতুন ইতিহাস তৈরি করতে দেখা যায়নি।
লন্ডনের বিভিন্ন সূত্র থেকে আমার কানে যে খবর এসেছে, তা সত্য হলে বলতে হবে বেগম জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডনে আসেননি। চিকিৎসার জন্য তিনি সাধারণত সৌদি আরবে যান। হাঁটুর অপারেশনের জন্যও গিয়েছিলেন সৌদি আরবে।
তাহলে চোখ ও দাঁতের চিকিৎসার জন্য লন্ডনে ছুটে এলেন কেন? এই কেনর জবাব হলো, বেগম জিয়া দেশে দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হতে পারেন এবং জেলে যেতে পারেন (তাঁর পুত্র তারেক রহমানও একই ভয়ে দেশে ফিরতে পারছেন না) এই ভয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশ ছেড়ে এসেছিলেন। কিন্তু সেই সঙ্গে তাঁর একটি গোপন এজেন্ডাও ছিল।
এই এজেন্ডাটি কী? দেশে সরকার উত্খাতের জন্য তিনি জামায়াতের সঙ্গে মিলে কয়েকটি ভয়াবহ ষড়যন্ত্র করেছেন, রাজপথে নিরীহ মানুষ হত্যার সন্ত্রাসও চালিয়েছেন। এর কোনোটাতেই সফল হতে পারেননি। ফলে নতুন কিছু ষড়যন্ত্রের ফর্মুলা তৈরি করে বিদেশে বসে কলকাঠি নাড়ানোর জন্য লন্ডনে চলে এসেছিলেন। লন্ডনে ষড়যন্ত্রের রাজা তাঁর পুত্র তারেক রহমান আগে থেকেই আছেন। এখন তাঁর সঙ্গে মিলে ষড়যন্ত্রগুলো সফল হলে হাসিনা সরকারের পতন ছিল অনিবার্য। আশা ছিল এই চক্রান্ত সফল হলে বিজয়ীর বেশে পুত্র তারেককে নিয়ে দেশে ফিরবেন। মাতা-পুত্রের বিরুদ্ধে আনীত সব মামলা-মোকদ্দমা বাতিল হয়ে যাবে। মাতা রাষ্ট্রপতি, পুত্র প্রধানমন্ত্রী হয়ে বিএনপি-জামায়াতের নতুন সরকার গঠিত হবে। তাতে এবার একটি সুধীসমাজ ও ‘নিরপেক্ষ মিডিয়া’র প্রতিনিধিও নেওয়া হবে। এটাই ছিল মূল পরিকল্পনা।
পরিকল্পনাগুলো কিভাবে সফল করা যাবে সেটাই ছিল মূল সমস্যা। ঠিক এই সময় পাকিস্তানে দুর্নীতির মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ে নওয়াজ শরিফের সরকারের পতন বাংলাদেশে সরকারবিরোধী তিনটি মহলকে উৎসাহিত করে তোলে। এই তিনটি মহল হলো, বিএনপি-জামায়াত, সুধীসমাজ ও একটি ‘নিরপেক্ষ’ মিডিয়া গ্রুপের মিলিত অ্যাক্সিস। আগে তথাকথিত আন্দোলন ও সন্ত্রাস দ্বারা হাসিনা সরকারের পতন ঘটাতে না পেরে এবার তারা দেশে জুডিশিয়াল ক্যু ঘটানোর চক্রান্ত করে। এই চক্রান্ত সফল করার লক্ষ্যে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে প্রভাবিত করার জন্য একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী ও তাঁর দুই আইনজীবী বন্ধুকে দলে টানা হয়।
সরকার উত্খাতের ষড়যন্ত্রের অস্ত্রটা শানানোই ছিল। ষোড়শ সংশোধনীসংক্রান্ত আপিলের রায়ে সরকার পরাজিত হলে এবং সংসদের মর্যাদার হানি করা হলে সরকারের স্থিতিশীলতায় আঘাত লাগবে। তারপর ১৫০ জনের মতো এমপির নির্বাচন জয়ের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে যে মামলা হয়েছে, তার পক্ষে রায় গেলে এই সরকারের পতন নিশ্চিত হয়। অর্থাৎ বর্তমান সরকার যখন দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনেছে এবং নিজেরাও ক্ষমতায় স্থিত হয়েছে, তখন এই জুডিশিয়াল ক্যু ঘটানো হলে সরকারের জন্য তা হতো বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো। সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হতো। দেশে ভয়াবহ রাজনৈতিক অরাজকতা দেখা দিত। বিএনপি-জামায়াতের কাঁধে চেপে হিংস্র মৌলবাদ আবার বাংলাদেশের কাঁধে জেঁকে বসত।
প্রধান বিচারপতিকে এই টোপ দেখিয়ে দলে টানার চেষ্টা হয়েছিল যে তিনি দুটি আপিল মামলাতেই সরকারের বিপক্ষে রায় দিলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মর্যাদা সমুন্নত হবে এবং এই স্বাধীনতা ও মর্যাদা পুনরুদ্ধারে প্রধান বিচারপতি হিসেবে তাঁর নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে—এটা আমার ধারণা। একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতিকে হয়তো এই টোপও দেখানো হয়েছিল যে হাসিনা সরকারকে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করা গেলে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হবে তিনি তার প্রধান হবেন। এটাও আমার ধারণা।
আমার দুর্ভাগ্য, ষোড়শ সংশোধনীসংক্রান্ত আপিল বিভাগের রায় যখন বেরিয়ে গেছে এবং রায়ে যুক্ত প্রধান বিচারপতির পর্যালোচনা নিয়ে সরকার ও প্রধান বিচারপতির মধ্যে বিপজ্জনক বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে, তখন প্রধান বিচারপতিকে টোপ দেখানোর দ্বিতীয় ষড়যন্ত্রটির কথা আমি জানতে পারি। আমি লন্ডনে বসেও প্রধান বিচারপতিকে টেলিফোনে সতর্ক করার চেষ্টা করেছি। আওয়ামী লীগের নেতারা আমাকে ভুল বুঝবেন তা জেনেও নির্বাহী ও বিচার বিভাগের মধ্যে যাতে বিপজ্জনক বিরোধ না বাধে, বিচার বিভাগের মর্যাদা ক্ষুণ্ন না হয় সে জন্য একের পর এক লেখা লিখেছি। বারবার প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন জানিয়েছি, তিনি যেন তিন কুচক্রী আইনজীবীর ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা না দেন। তিনি সতর্ক হয়েছেন এবং এই কুচক্রীদের ফাঁদে পা দেননি। কিন্তু তখন বহু দেরি হয়ে গেছে। বুড়িগঙ্গার জল অনেক দূর গড়িয়েছে।
জুডিশিয়াল ক্যু ঘটানোর চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগনির্ভর ষড়যন্ত্র। অকস্মাৎ অতি বৃষ্টি ও প্লাবনে বাংলাদেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়। সরকার খাদ্যঘাটতি থেকে মুক্ত করে দেশকে খাদ্যে উদ্বৃত্ত দেশে পরিণত করেছিল। প্রাকৃতিক দুর্যোগে শস্য নষ্ট হয়ে আবার খাদ্যঘাটতি দেখা দেয়। সরকার সমস্যাটি মোটামুটি মোকাবেলা করেছে। কিন্তু এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াত, বিশেষ করে জামায়াত একটি রাজনৈতিক চক্রান্ত ঘটায়। রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর মিয়ানমারের অত্যাচার ও নিপীড়ন বহু দিনের। এই রোহিঙ্গাদের ওপর সৌদি আরব ও জামায়াতের বিশাল প্রভাব। তারই সুযোগ নিয়ে নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের একাংশের মধ্যে জামায়াত একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী গেরিলা গ্রুপ তৈরি করেছে। নাম আরাকান স্যালভেশন আর্মি।
এর আগে এই গেরিলাদের দমনের নামে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর যথেষ্ট অত্যাচার চালিয়েছে। তখন তারা বিশাল সংখ্যায় বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিল। তাদের মধ্যে চার লাখ এখনো বাংলাদেশেই আছে। গত ২৫ আগস্ট জামায়াত প্রভাবিত আরাকান গেরিলারা মিয়ানমারের পুলিশ ঘাঁটিতে আক্রমণ চালায়। তারই সুযোগ নিয়ে মিয়ানমারের সৈন্যরা নিরীহ রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বর গণহত্যা শুরু করে। বাংলাদেশে জল-প্লাবনের সঙ্গে জন-প্লাবন শুরু হয়। বিএনপি-জামায়াতের নেতারা রোহিঙ্গাদের জন্য সরকার কিছুই করছে না বলে মায়াকান্না শুরু করেন। তাঁদের আশা ছিল, একেই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বাংলাদেশ বিপর্যস্ত। এখন রোহিঙ্গা সমস্যায় ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়ায় তাদের চাপে অর্থনীতি ভেঙে পড়বে। দেশে অরাজকতা দেখা দেবে এবং সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে।
কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের এ চেষ্টাও সফল হয়নি। হাসিনা সরকার ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে দেশে আশ্রয় দিয়েছে, তাদের খাওয়া-পরার ব্যবস্থা করেছে। দুস্থ মানবতার ত্রাণে শেখ হাসিনার এই সফল ভূমিকার জন্য বিশ্ব জনমতের কাছে তিনি এখন ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দান হাসিনা সরকারের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আরো বাড়িয়েছে।
অন্যদিকে খালেদা জিয়া বিদেশে দীর্ঘ কয়েক মাস অবস্থান করে প্রকাশ্য রাজনীতি থেকে দূরে থেকে নেপথ্যে বসে একটার পর একটা চক্রান্ত করে এবং তাতে সফল হয়ে বিজয়ীর বেশে দেশে ফেরার যে আশা করেছিলেন, তা ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি আর কী করতে পারেন? দলের অস্তিত্ব ও নিজের নেতৃত্ব রক্ষার জন্যই তিনি দেশে ফিরে এসেছেন। নির্বাচনে তাঁকে যোগ দিতে হবেই। তিনি এ-ও জানেন, তাঁর দল যাতে নির্বাচনে যোগ দেয় সে জন্য তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির যত মামলা-মোকদ্দমা থাকুক, সরকার তাঁকে বেশি ঘাঁটবে না।
আগেই বলেছি, রহস্য উপন্যাসের নায়িকার মতো বেগম জিয়া লন্ডনে প্রকাশ্য রাজনৈতিক তত্পরতা থেকে যতই বিরত থাকুন, পর্দার আড়ালের তত্পরতা বন্ধ ছিল না। লন্ডনের বাজারে তাঁর সম্পর্কে যে গুজবগুলো চাউর ছিল, তা হলো, তিনি পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা চক্র আইএসআইয়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন। ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গেও তাঁর বৈঠক হয়েছে। সর্বশেষ খবর ছিল, ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেছেন। তাদের কাছ থেকেই জানতে পারেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বাংলাদেশ সফরে যাচ্ছেন। সম্ভবত সঙ্গে সঙ্গে তিনি সিদ্ধান্ত নেন, সুষমা স্বরাজের সঙ্গে দেনদরবার করার জন্য এখনই তাঁর ঢাকায় ফেরা দরকার।
লন্ডনে বিজেপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে মাতা-পুত্রের কী আলাপ হয়েছে তা আমি জানি না। শুধু যুক্তরাজ্য বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানতে পেরেছি বৈঠকটি হয়েছে। এই বৈঠকটি থেকে কোনো ধরনের উৎসাহ পাওয়া কি বেগম জিয়ার তড়িঘড়ি দেশে ফেরার অন্যতম কারণ? মনে হয় অন্যতম কারণ। তিনি দেশে ফিরেই ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসার চেষ্টা করেন। প্রথমে তাঁকে নিজের বাড়িতে ভোজসভায় আমন্ত্রণ জানান। সুষমা স্বরাজ তাতে রাজি হতে পারেননি। অতঃপর ঢাকা ত্যাগের জন্য বিমানবন্দরে যাওয়ার সময় ভারতীয় মন্ত্রীকে কিছুক্ষণের জন্য বেগম জিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসার অনুরোধ জানানো হয়। সুষমা স্বরাজ তাতেও রাজি না হওয়ায় বেগম জিয়া শেষ পর্যন্ত সোনারগাঁও হোটেলে গিয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
তাতে কি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল বিএনপির সম্মান বাড়ল, না এই দলের নেত্রী হিসেবে খালেদা জিয়ার মর্যাদা রক্ষা পেল? ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের সময়ও তাঁর সঙ্গে গায়ে পড়ে সাক্ষাতের জন্য বিএনপি নেত্রী হীনম্মন্যতার পরিচয় দিয়েছিলেন। তার আগে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ঢাকা সফরকালে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রাজি না হয়ে গোটা ভারতকে কেন তিনি অসম্মান করেছিলেন সে প্রশ্নের জবাব তখন যেমন দিতে পারেননি, এবারও সুষমা স্বরাজের ঢাকা সফরকালে জিজ্ঞাসিত হয়ে থাকলে তিনি তা দিতে পেরেছেন বলে মনে হয় না।
ভারতকে আওয়ামী লীগ সরকারের চেয়ে বেশি ছাড় ও সুবিধা দেওয়ার টোপ দেখিয়ে বেগম জিয়া বিজেপি সরকারের মন গলাতে পারবেন—এটা সম্ভব কি? আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি হালে বিজেপি সরকার কিছুটা বিরক্ত হতে পারে। বিশেষ করে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে। তার আভাস ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তীর সাম্প্রতিক কথাবার্তায় বোঝা গেছে। কিন্তু সে জন্য দিল্লি হাসিনা সরকারের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করবে এমন ভুল করার পাত্র প্রধানমন্ত্রী মোদি নন।
ভারতের একটি দৈনিকে সম্প্রতি স্পষ্ট ভাষাতেই বলা হয়েছে, ‘সাপ খোলস পাল্টায়, চরিত্র পাল্টায় না। চরম ভারতবিদ্বেষী বাংলাদেশের বিএনপি এখন ক্ষমতায় যাওয়ার লোভে খোলস পাল্টে ভারতপ্রেমী সাজতে পারে। কিন্তু তার চরিত্র পাল্টাবে না। বিএনপি বাংলাদেশে ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের আবার অবনতি ঘটবে। ভারতের পূর্ব সীমান্তে আবার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সন্ত্রাস শুরু হবে। তাতে পাকিস্তানকে সহায়তা দানের সুযোগ দেওয়া হবে। ভারতকে দুই ফ্রন্টে আবার পাকিস্তানকে মোকাবেলা করতে হবে। তার প্রতিরক্ষা ব্যয় বহু গুণ বাড়বে। সবচেয়ে বড় ভয়, ভারতের সবচেয়ে কাছের দেশটিতে জিহাদিস্টদের প্রভাব ও প্রতিষ্ঠা বাড়বে, যা ভারতের নিরাপত্তার জন্য হবে একটা বড় হুমকি।
সুতরাং ভারত বা পাকিস্তান অথবা পশ্চিমা শক্তি—কোনো বহির্শক্তিরই মুখাপেক্ষী হয়ে বেগম জিয়া সহজে ক্ষমতায় যেতে পারবেন সে আশা নেই। তাঁকে ক্ষমতায় যেতে হলে দলকে পুনর্গঠিত ও সক্রিয় করে তুলতে হবে। জামায়াতের সংস্রব মুক্ত করতে হবে। মির্জা ও রিজভীর অসৎ ও অসার বাগ্মিতা বন্ধ করে জনগণের কাছে সঠিক কর্মসূচি নিয়ে হাজির হতে হবে। গণতান্ত্রিক পন্থায় একটি শক্তিশালী দল নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। খালেদা জিয়া যদি সেই শুভ সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশে ফিরে থাকেন, তাহলে তাঁকে স্বাগত জানাব। কিন্তু ভয় হয়, যে ঘোড়ার পিঠে বসে তিনি রাজনীতি করছেন, সেই ঘোড়ার লাগাম তিনি ঠিকমতো ধরে রাখতে পারবেন কি না?
আর/১২:১৪/২৫ অক্টোবর